|

রবিরঙ্গ- খোন্দকার শাহিদুল হক

প্রকাশিতঃ ৪:৫২ অপরাহ্ণ | এপ্রিল ০৮, ২০১৮

খোন্দকার শাহিদুল হক

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বান্ধবীর নাম ছিল বিশাখা।এই বিশাখা থেকেই বৈশাখ। বিশাখা একদিন ঠাকুরের বাড়ীর পাশ দিয়ে কোথাও যাচ্ছিল। এমন সময় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাকে দেখেই বাড়ীতে আসার জন্য ডাকতে চাইল। কিন্তু সরাসরি ডাকলে গিন্নির রোষাণলে পড়তে পারে ভেবে, ঠাকুর তৎক্ষণাৎ গেয়ে উঠলেন, এস হে বৈশাখ, এস এস…
গিন্নি বললেন, বিশাখাকে ডাকার কী দরকার পড়লো? সে তো না ডাকলেও আসবে।তুমি ভাবছো, আমি কিছুই বুঝি না, না? 
ঠাকুর বললেন, আরে না। এটা বৈশাখী বন্দনা। তুমি যা ভাবছো তা কিন্তু না।
এমন সময় বিশাখা সেখানে এসে হাজির। সে বললো, ঠাকুর, আমি জানতাম, তুমি আমাকে দেখলেই ডাকবে। মূলত না ডাকলেও আমি আসতাম।
দুঃখের বিষয় হলো বিশাখা প্রথমে ঠাকুরপত্নীকে দেখে নি। হঠাৎ চোখে পড়তেই বললো হ্যাঁ গো, ঐ গানটায় এবার সুর দিতেই হবে। ঐ যে, ঐ গানটা। এস হে বৈশাখ, এস এস…
ঠাকুর ঢোকগিলে বললো, সুর না হয় দেব ক্ষণ, এখন যে ঝড় উঠবে তার কী হবে?
বিশাখা বললো,
ডাকলে কেন উঠবে না ঝড়
ঝড় তো ওঠে মনে
তুমি কেন ভয় পেয়ে গো
পালাও ঘরের কোণে।
এসেই যখন পড়েছি আজ
তুফান হয়ে নাচবো
এ ঘর ভেঙে নতুন ঘরের
স্বপ্ন নিয়ে বাঁচবো।

ঠাকুরপত্নী বললো,
ঘর ভাঙা কি এত সোজা
দেখাচ্ছি আজ তোকে
আষাঢ় এলেই কাঁদবি শুধু
মরবি তখন শোকে।

ঠাকুর বললো,
তাপস নিঃশ্বাস বায়ে
মুমূর্ষুরে দাও উড়ায়ে
বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক…

ঠাকুরপত্নী এবার রেগে গিয়ে বললো,
কী! এতবড় কথা! তুমি আমাকে আবর্জনা বললে? এই ছিল আমার কপালে। নতুন জিনিস দেখলেই তোমরা পুরাতনকে আবর্জনা ভাবো…
বিশাখা দেখলো অবস্থা বেগতিক। তাই এখনই প্রস্থান করা দরকার।

 

লেখক

প্রশাসনিক কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, গাজীপুর।

সাবেক সিএ-কাম- ইউডিএ, উপজেলা নির্বাহী অফিস, ভালুকা।

Print Friendly, PDF & Email