|

‘আল্লাহর দোহাই, সৌদিতে লোক পাঠাবেন না’

প্রকাশিতঃ ১০:৩৮ পূর্বাহ্ণ | সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৮

ডেস্ক রিপোর্ট, ভালুকার খবর: ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার মাতানিয়া গ্রামের বাসিন্দা কবির আহমেদ গত ২১ বছর ধরে রয়েছেন সৌদি আরবে। এরপর কিছুদিন আগে পরিবারের পীড়াপীড়িতে সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা খরচ করে ২৩ বছর বয়সী ছেলেকে মদিনায় নিয়ে আসেন। যে কোম্পানির মাধ্যমে এসেছেন তাদের ওখানে চাকরি না থাকায় গত সাত মাস ধরে বেকার বসে আসে ছেলেটা।

কবির জানান, তিনি গত ২১ বছরের প্রবাস জীবনে কখনো এমন দুরবস্থা দেখেননি। ২১ বছর ধরে তিনি মদিনা আল মনোয়ারায় বসবাস করছেন। বর্তমানে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন তিনি।

সৌদির বর্তমান অবস্থা তুলে ধরতে তিনি তার বেতনের উদাহরণ টেনে বলেন, ২৬০০ রিয়েল বেতন পাই। এরমধ্যে বাসাভাড়া ২০০, পরিবহন ১০০ ও আকামা বাবদ ২০০ রিয়েলসহ কোম্পানি ৫০০ রিয়েল কেটে নিলেও ২১০০ রিয়েল বেতন পেতাম। এখন কোম্পানি ১৬০০ রিয়েল দেয়। বাকী এক হাজার রিয়েল কেটে নেয়।

গত দুই দশক সৌদি আরবে রাজারহালে দিন কাটিয়েছেন কবির। চাকরি-ব্যবসা সব ক্ষেত্রে সুযোগ-সুবিধা ছিল, কিন্তু এখন চিত্র ভিন্ন। কবির চিন্তা করছেন তার ছেলেকে দেশে ফেরত পাঠাবেন। তিনি সহজেই অন্য কোথাও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারেন, তবে ধরা পড়লে দেশে ফেরত পাঠাবে এই ভয়ে ছেলেকে কাজে দেননি।

কবির আক্ষেপ করে বলেন, ‘আল্লাহর দোহাই, সৌদিতে লোক পাঠাবেন না, ভিসা পেলেই বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে লোক পাঠাবেন না। ভিসা নিয়ে আসতে পারলেও এখানে কাজ নাই। বেতন খুবই কম।’

তিনি আরও বলেন, ‘সৌদি সরকার আকামা, ভ্যাট ও ইন্সুরেন্সসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আগের তুলনায় ফি বৃদ্ধি করায় পুরনো-নতুন সব বাংলাদেশির জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। পুরনোদের বেতন কমছে, নতুনরা কাজই পাচ্ছেন না।’

দেশের মানুষ যেন সৌদি ভিসা পেলেই আসার জন্য পাগল না হয়, জেনেশুনে ও বুঝে যেন না আসে- সে ব্যাপারে সরকারকে প্রয়োজনীয় প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির আহ্বান জানান তিনি।

Print Friendly, PDF & Email