|

ভালুকায় মামলাবাজ নারীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ গ্রামবাসি

প্রকাশিতঃ ১:২৪ পূর্বাহ্ণ | আগস্ট ০৪, ২০১৯

স্টাফ রিপোর্ট, ভালুকার খবর: ভালুকায় মামলাবাজ এক নারীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে উপজেলার সদর উনিয়ননের আশকা গ্রামবাসি। জোরপূর্বক জমি দখল, মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী, মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসিয়ে চাকুরীচ্যুত, নিরীহ লোকের উপর অত্যাচার, টাকা দার নিয়ে ফেরত না দেয়াসহ কি অভিযোগ নেই আশকা গ্রামের মৃত রুহুল আমিনের মেয়ে নাসিমা আক্তারের বিরুদ্ধে। মামলাবাজ নাসিমার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পরেছে গোটা গ্রামবাসী। তাঁর অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ও ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। কিন্তু তাতেও ক্ষান্ত হয়নি নাসিমা।

ভূক্তভোগী ব্যক্তি ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নাসিমা আক্তার নিজের ভাই রমিজ খান (৪০)কে অপহরণের নাটক সাজিয়ে স্থানীয় ৯ ব্যক্তিকে আসামী করে ভালুকা মডেল থানায় (মামলা নং ১০/১৩) দায়ের করেছিলো। পরে ওই ব্যক্তিরা বিভিন্ন মেয়াদে হাজতবাস করেন। মামলা টি প্রথমে থানা পুলিশ পরে পিবিআই সবশেষে ময়মনসিংহ গোয়েন্দা শাখা ওই ৯ ব্যক্তিকে নির্দোষ উল্লেখ করে তদন্ত প্রতিবেদন দেন। ডিবি পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন, ‘নাসিমা আক্তারের স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে জমি সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে। সেই বিরোধ থেকে তিনি এই অপহরনণের ঘটনা সাজিয়েছেন’।

মামলায় ৯ ব্যক্তির একজন রফিকুল ইসলাম (৬০) তিনি বলেন, “নাসিমার সাথে আমাদের জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। তাঁর স্বামী তৎকালিন ভালুকা মডেল থানার কর্মরত মজিবর দারোগা ক্ষমতা প্রয়োগ করে আমাদের জমি দখল করে ও আমার ১লক্ষ টাকা মূল্যের গাছ কেটে নেয়। আমাকে বেশ কয়েকবার মেরেছে। আমাদের ফাঁসানোর জন্য নাসিমা তাঁর নিজের ভাইকে লুকিয়ে রেখে আমাদের বিরোদ্ধে গুম মামলা দায়ের করে। আমি বিনা অপরাধে ২মাস জেল খেটেছি। আমার ভাতিজা শিহাবের সেনাবাহিনিতে চাকুরি হয়েছিলে। মিথ্যা মামলা ফাঁসিয়ে তাঁকে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে। আমারা মোট ৪জন নাসিমার ওই মিথ্যা মামলায় জেল খেটেছি। আমরা দীর্ঘ ৬বছর এই মিথ্যা মামলায় হয়রানী হয়ে কিছুদিন আগে অব্যাহতি পেয়েছি। এবং পুলিশ প্রতিবেদন দিয়েছে যে, ওই ঘটনাটি সম্পূর্ণ সাজানো। সে আমাদের এলাকায় এরকম আরও ৮টি মামলা করেছে যা পরবর্তিতে সবগুলো মিথ্যা বলে প্রমানিত হয়েছে। এই মহিলার অত্যাচারে থেকে আমরা গ্রামবাসী মুক্তি চাই”।

স্থানীয় আবুল খাঁন (৭০) বলেন, “নাসিমা খুব খারাপ প্রকৃতির মানুষ। সে এই এলাকার মানুষকে প্রচুর অত্যাচার নির্যাতন করেছে, কেউ তাঁর সাথে পারেনা। নাসিমা জনপ্রতিনিধি এলাকার মুরুব্বি কাওকেই মানেনা। কিছু হলে বা না হলেই মানুষের বিরোদ্ধে মিথ্যা মামলা করে”।

স্থানীয় প্রবাসির স্ত্রী নূর জাহান বলেন, “আমাদের সকল প্রকার কাগজপত্র থাকার পরও নাসিমা আমাদের ১৪শতাংশ জমি অবৈধ্য ভাবে দখল করে রেখেছে। সে কোন বিচার শালিশ মানেনা, এ বিষয়ে আমি থানায় জিডিও করেছি (নং-৫৪৩/১৪-০৭-১৯)। নাসিমা আমাকে নানা রকম হুমকি দেয়। সে আমার মেয়েরে জামাইয়ের চাকুরি খেয়ে ফেলবে বলেও হুমকি দিয়েছে”।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাসিমা আক্তার বলেন, “আমার বিরোদ্ধে আনা সকল অভিযোগ মিথ্যা, আমাকে নিরিহ পেয়ে এলাকার লোকজন নানারকম ঝামেলায় ফেলতে চায়”।

ভালুকা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মাঈন উদ্দিন জানান, “নাসিমা নামের ওই মহিলাটা নাকি খুব মামলাবাজ, এলাকার মানুষের অনেক অভিযোগ তাঁর বিরোদ্ধে, আমি বিষয়টি নিয়ে খুব তারাতারিই নিজে ঘটনাস্থলে যাবো চিন্তা করেছি”।

Print Friendly, PDF & Email