|

নরমাল ডেলিভারি পদ্ধতি সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়ার আহ্বান সমাজকল্যাণমন্ত্রীর

প্রকাশিতঃ ৫:২৬ অপরাহ্ণ | ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২০

রাজধানীর তেজগাঁও ইমপাল্স হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে শনিবার বেদনামুক্ত প্রসব ব্যবস্থাপনা (পেইনলেস নরমাল ডেলিভারি) বিষয়ক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সিঙ্গাপুর, যুক্তরাজ্য ও আয়ারল্যান্ড’র বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা অংশ নেন। 

সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী নূরুজ্জামান আহমেদ এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত চিকিৎসক প্রফেসর ডা. সাঈবা আক্তার এবং জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমীন। এসময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিঙ্গাপুরের চিকিৎসক ডা. তৌফিক ইসলাম, আয়ারল্যান্ডের চিকিৎসক ডা. কাজী নাফিজা হামিদ ও ডা. জিন্নুরাইন জায়গীরদার প্রমুখ। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ইমপাল্স হাসপাতাল’র প্রতিষ্ঠাতা ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রফেসর ডা. জাহীর আল-আমীন। 

উল্লেখ্য, উন্নত বিশ্বের এই ‘পেইনলেস নরমাল ডেলিভারি’ পদ্ধতি বাংলাদেশে প্রথম সফলভাবে বাস্তবায়ন করছে ইমপাল্স হাসপাতাল।

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সমাজকল্যাণমন্ত্রী বলেন, সন্তান প্রসবকালে মা এবং নবজাতকের অকাল মৃত্যু রোধে সরকার নিরলসভাবে কাজ করছে। এর ফলে বর্তমানে প্রসবকালীন মা এবং সন্তানের মৃত্যুহার অনেক কমে এসেছে। তবে এক্ষেত্রে সিজারিয়ান অপারেশনের প্রচলন উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে বলে প্রতীয়মাণ হয়। এ পর্যায়ে বাংলাদেশে বেসরকারি উদ্যোগে পেইনলেস নরমাল ডেলিভারি পদ্ধতি চিকিৎসাসেবার যুগান্তকারী পদক্ষেপ বলে মনে হচ্ছে। প্রথমবারের মতো দেশে এ ধরনের চিকিৎসাসেবা চালু করায় ইমপাল্স হাসপাতালকে ধন্যবাদ দিতে হয়। 

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের স্বাস্থ্যসেবার ব্যাপারে বেশ মনোযোগী। তার একান্ত প্রচেষ্টায় গত ১০-১১ বছরে দেশের স্বাস্থ্য খাতে প্রকৃত উন্নতি হয়েছে। করোনা ভাইরাসসহ ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়ার মত দেশের যে কোনো মহামারী সমস্যার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী সদা সচেতন ও সতর্ক। পেইনলেস নরমাল ডেলিভারি চিকিৎসা পদ্ধতির বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে এলে আমার বিশ্বাস তিনি অভিভূত হবেন।

মন্ত্রী বলেন, আমার জানা মতে চিকিৎসাসেবায় অনেক নতুন প্রযুক্তি পদ্ধতি আবিষ্কার হলেও নিরাপদ নিষ্কষ্টক সন্তান জন্মদানের সহজ পদ্ধতি এই উপমহাদেশে কম। তাই পেইনলেস নরমাল ডেলিভারির ব্যাপারে আমাদের দেশের মায়েদের সচেতন করতে হবে। এজন্য সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক প্রচারের প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি।

তিনি আরও বলেন, এ কথা সবাই স্বীকার করবেন এই আধুনিক যুগেও নিরাপদ সন্তান প্রসব আমাদের দেশে অনেক বড় একটি সমস্যা। সিজারিয়ানের মাধ্যমে একটি পরিবারের কেবল আর্থিক ক্ষতিই হয় না, প্রসূতি বা মায়ের অনেক স্বাস্থ্য সমস্যাও দেখা দেয়। একজন মা ২ অথবা ৩টা অপারেশনের পর বাকী জীবন অনেক শারীরিক সমস্যায় ভোগেন। তাই পেইনলেস নরমাল ডেলিভারির সাফল্য দেশের চিকিৎসাসেবায় নব দিগন্তের সূচনা করবে বলে আমি আশা রাখি।

‘তবে এই ধরণের স্বাস্থ্য সেবা কেবল রাজধানী কেন্দ্রিক সীমাবদ্ধ থাকুক এইটা আমরা চাই না। কারণ এখনো সন্তান প্রসবকালে মাতৃ মৃত্যুর হার গ্রামাঞ্চলে বেশি। তাই ইমপাল্স হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে অন্তত ধীরে ধীরে জেলা পর্যায়ে এই চিকিৎসা পদ্ধতি সম্প্রসারণে তারা যেন উদ্যোগী হন। যার ফলে শুধু মানুষের স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নই হবে না সামাজিক ও পারিবারিক কল্যাণও সাধিত হবে।’ যোগ করেন মন্ত্রী নূরুজ্জামান আহমেদ এমপি। 

Print Friendly, PDF & Email