|

ধূমপানের সঙ্গে করোনাভাইরাস সংক্রমণ

প্রকাশিতঃ ৮:১৮ অপরাহ্ণ | এপ্রিল ২১, ২০২০

অধ্যাপক ড. অরূপরতন চৌধুরী:

করোনাভাইরাস যেমন ফুসফুসকে সংক্রমণ করে তেমনি ধূমপান বা ই-সিগারেট কিংবা সীসা সমানভাবে আমাদের ফুসফুসকে সংক্রমণ করে। ফলে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ও ধূমপান বা ই-সিগারেট, গাঁজা, সীসার মাধ্যমে ফুসফুস সংক্রমিত হয়।

কভিড-১৯ করোনাভাইরাসের আক্রমণ থেকে নিজেদের ও আমাদের আত্মীয়স্বজন ও আশপাশের মানুষকে রক্ষা করতে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা  (WHO) বিশ্ববাসীকে কিছু নির্দেশিকা পালন করে যেতে বলেছে। এগুলো পালন করলে শারীরিক ও মানসিক দুদিক থেকেই আমরা উপকৃত হতে পারি। যেমন :প্রতিদিন প্রাপ্তবয়স্করা ৩০ মিনিট ও অপ্রাপ্তবয়স্করা ৬০ মিনিট ব্যায়াম করবেন যেমন- বাসাতেই ফ্রি-হ্যান্ড এক্সসারসাইজ অথবা ইয়োগা করতে পারেন। প্রতিদিন কিছু পুষ্টিকর খাবার যেমন ফলমূলের মধ্যে এন্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার যেমন কমলা, পেয়ারা, জামবুরা, আমড়া, কামরাঙা, লেবুর রস বা ফলের রস এবং শাকসবজি লালশাক, পালংশাক, পুইশাক এবং গাঁজর, শসা, টমেটো, লেটুসপাতা, কাঁচামরিচ ও একটি আস্ত লেবুর রস মিশিয়ে এক বাটি সালাদ।

দীর্ঘক্ষণ এক জায়গায় বসে না থেকে ৩০ মিনিট পরপর অন্তত ৩ মিনিট পায়চারি বা ঘোরাঘুরি করে আবার বসা। মানসিক স্বাস্থ্যের সুস্থতার জন্য পরিচিত মানুষের সঙ্গে কথা বলা, তাদের সঙ্গে বুদ্ধি পরামর্শ করা, কারণ এ সময়ে সমবেদনা ও সহানুভূতি একটা ওষুধের মতো কাজ করে। প্রতিদিনই মিউজিক বা গান শোনা, বই পড়া সেই সঙ্গে লুডু, ক্যারম খেলা মনের অসুস্থতাকে দূর করে।

অতিরিক্ত সংবাদ না শোনা। দু-একটা নির্ভরযোগ্য সংবাদ শোনা। বিভিন্ন নেশা বা বদঅভ্যাস দূর করা যেমন- ধূমপান শুধু নিজেকে না পরোক্ষভাবে বাড়িতে মা-বাবা, ভাইবোন, স্ত্রী, সন্তান সবাইকে সমানভাবে ক্ষতি করে। সেই সঙ্গে মদপান অবশ্যই পরিহার করতে হবে। কারণ এটি আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ শক্তি নষ্ট করে।  করোনাভাইরাস যেমন আমাদের ফুসফুসকে সংক্রমণ করে তেমনি ধূমপান বা ই-সিগারেট কিংবা সীসা সমানভাবে আমাদের ফুসফুসকে সংক্রমণ করে। ফলে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ও ধূমপান বা ই-সিগারেট, গাঁজা, সীসার মাধ্যমে ফুসফুস সংক্রমিত হয়। ফলে ধূমপায়ী বা মাদকাসক্তদের করোনাভাইরাস খুব দ্রুত ফুসফুসকে সংক্রমিত করে, সেই কারণে তাদের রোগাক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভেন্টিলেটরে থাকার ঝুঁকি অন্য অধূমপায়ীদের তুলনায় অনেক গুণ বেশি। সুতরাং এখনই করোনাভাইরাসের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে ধূমপায়ী ও মাদকাসক্তদের ধূমপান ও মাদক গ্রহণ বন্ধ করা জরুরি। কারণ প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই শ্রেয় সস্তা ও নিরাপদ।

লেখক : প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, মানস।

(মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা)

Print Friendly, PDF & Email