|

ধোবাউড়ায় পর্যটন শিল্পের রয়েছে অপার সম্ভাবনা

প্রকাশিতঃ ২:১১ পূর্বাহ্ণ | মে ১৮, ২০১৮

ধোবাউড়া প্রতিনিধি, ভালুকার খবর : ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার সীমান্তবর্তী ভারতের মেঘালয়ের কূল ঘেঁষা বিস্তীর্ণ পাহাড়ী অঞ্চলটি স্বপ্নময় লীলাভূমি হিসেবে বহুল পরিচিত।

এ উপজেলার ১ নং দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের ভেদীকুড়া, জয়রামপাড়া, গাছুয়া পাড়ায় রয়েছে বন বিভাগের ছোট-বড় টিলা ও পাহাড়। পাহাড়ের গাঁয়ে সারি সারি গাছের অপরূপ নৈসর্গিক দৃশ্য। দূর থেকে মনে হয় সব গুলো পাহাড় মেঘালয়ের পাহাড়ের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়িয়ে প্রকৃতি প্রেমীদের হাতছানি দিচ্ছে। শাল, সেগুন, মেহগনি, আকাশমনি, ইউক্যালিপটাস, বকাইন নিম, একাশিয়া, শিশুবৃক্ষ সহ বিভিন্ন প্রজাতির বনজ বৃক্ষের সমাহার এই পাহাড়গুলোতে।

এখানে রয়েছে বৈদেশিক সাহায্যপুষ্ট একটি অত্যাধুনিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের নির্মাণশৈলী ও পরিবেশ চোখ জুড়াবে যে কোন দর্শকের।
শুধু তাই নয়। এখানে রয়েছে বাংলাদেশের সবচেয়ে উন্নতমানের চীনামাটির খনি। কিছু কিছু চীনামাটির পাহাড়ে রয়েছে বিচিত্র রংয়ের মাটি। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ভ্রমন পর্যটকরা ছুটে আসেন অবহেলিত এই অঞ্চলটিতে।

দেশের সিরামিক কোম্পানীগুলোর কাঁচামালের অন্যতম উৎস চীনামাটির বিশাল ভান্ডার হিসেবে পরিচিতি থাকলেও উপজেলার এই ইউনিয়নটিতে ১ ইঞ্চিও পাকা বা আধা পাকা রাস্তা নেই। ফলে ট্রলি ভর্তি করে চীনামাটি পরিবহনের ফলে কাঁচা রাস্তাগুলোর বেহাল দশা। পর্যটকদের কাছে প্রিয় এই স্থানটি রক্ষণাবেক্ষনেরও কোন উদ্যোগ নেই। ফলে কোন প্রকার নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে চীনামাটির পাহাড়গুলো অবাধে কেটে ধ্বংস করে চলেছে একটি মাটিখাদক চক্র। দেখার কেউ নেই। যেন বিশাল ভূখন্ডের বাংলাদেশের এ এক ছিটমহল।

তবে প্রকৃতির এত সৌন্দর্য, এত রূপ দেখার সাধ মেটাতে এখানে প্রতিনিয়ত দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শণার্থীরা আসলেও বেলা পশ্চিম দিকে গড়িয়ে পড়তে শুরু করলেই চিন্তার ভাঁজ পড়ে তাদের কপালে। কেননা এই উপজেলায় থাকার কোন রেস্ট হাউজ, হোটেল বা মোটেল নেই।

পর্যটকদের উপস্থিতির প্রধান অন্তরায় খারাপ রাস্তাঘাট ও থাকার সমস্যা। পাশাপাশি পর্যটক আসা-যাওয়ার এই এলাকায় কোন পুলিশ ফাঁড়ি না থাকায় পর্যটকরা সব সময় নিরাপত্তাহীনতায় ভূগেন।

এই উপজেলা একমাত্র ডাকবাংলোটি এখন শুধুই গরু-ছাগলের নিরাপদ আশ্রয়স্থল। মাঝে মাঝে বেদে ও বাস্তুহারা কিছু মানুষের উপস্থিতি পরিলক্ষিত হয়। তবে রাতের আঁধারে এই ডাকবাংলোতে অনৈতিক কাজকর্মও চলে বলে লোকমুখে শোনা যায়।

পর্যটন সম্ভাবনাময় ও খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ অবহেলিত ধোবাউড়া উপজেলাকে আধুনিকায়নে বর্তমান সরকার সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহন করবেন এটাই ধোবাউড়া উপজেলাবাসীর প্রাণের দাবি।

Print Friendly, PDF & Email