|

নেত্রকোনায় চাঞ্চল্যকর মিহির দম্পতি খুনের রহস্য উন্মোচন

প্রকাশিতঃ ১০:২৫ অপরাহ্ণ | এপ্রিল ১৫, ২০১৮

নেত্রকোনা প্রতিনিধি : দীর্ঘ সাত মাস পর নেত্রকোনা জেলা শহরের চাঞ্চল্যকর মিহির দম্পতি খুনের রহস্য উন্মোচন করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিআইবি)।

গত সোমবার নেত্রকোনা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হলে বিচারকের কাছে ১৬৪ ধারায় আসামিরা এই জোড়া খুনের মামলায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলো রাসেল মিয়া, পলাশ মিয়া, রুবেল, আতিকুল ইসলাম ও পলাশ। এরা সবাই শহরের সাতপাই ও মধ্য নাগড়া এলাকার বাসিন্দা। সোমবার বিকাল পাঁচটায় নেত্রকোনা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের হাকিম আলমগীর হোসাইনের আদালতে হাজির করার পর তারা বিচারকের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

পুলিশ সুপার আবু বক্কর সিদ্দিক সাংবাদিকদের কাছে আসামিদের জবানবন্দির বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘আসামিরা তাদের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে খুনের ঘটনা স্বীকার করেছে। তারা জানায়, ঘটনার আগের দিন তারা সবিতা বিশ্বাসের বাড়িতে গাছের ডাল কাটতে যায়। কাজ শেষে সবিতা বিশ্বাস তাদের ঘরের ভেতরে ডেকে নেন। এ সময় তিনি আলমারির দেরাজ থেকে ১০০ টাকা বের করে মজুরি দেন। তখন আসামিদের একজন ড্রয়ারে থাকা অনেক টাকা দেখতে পায়। এরপর তারা ওই বাড়িতে চুরি করার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে রাতের আধাঁরে ওই ঘরে প্রবেশ করে এবং মিহির বিশ্বাসকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনা টের পেয়ে সবিতা বিশ্বাস রান্নাঘর থেকে মূল ঘরে আসেন। আর তখন তাকেও খুন করে দুর্বৃত্তরা। আসামিরা সবাই মাদকসেবী বলে স্বীকার করেন পুলিশের এই কর্মকর্তা। ’

মিহির কান্তি নেত্রকোনার সদর উপজেলার কৃষ্ণ গোবিন্দ উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন ও তার স্ত্রী তুলিকা সমাজসেবা অধিদফতরের নেত্রকোনা সদর উপজেলার কাইলাটি ইউনিয়ন সমাজকর্মী হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন।

নিহত দম্পতির ছেলে সুমন বিশ্বাস বলেন, ‘আমি এই মামলাটি দায়ের করার পর আমাকে অনেক হয়রানি হতে হয়েছে। স্থানীয় পুলিশ এ ঘটনায় আমাকেও সন্দেহ করেছে। যে কারণে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরিরত থাকা অবস্থায় আমাকে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। পুলিশ এ মামলার জট খুলতে না পারলে মামলাটি ডিবিতে যায়। সর্বশেষ পিবিআই এ মামলার রহস্য উন্মোচন করতে সফল হয়।’

উল্লেখ্য, ২০১৭ সলের ১০ অক্টোবর নেত্রকোনা জেলা শহরের সাতপাই বাবুল সরণি এলাকায় মিহির বিশ্বাস (৭০) ও তার স্ত্রী সবিতা চন্দ বিশ্বাস (৫৮) নিজ বাসভবনে খুন হন। ১৩ অক্টোবর পুলিশ তাদের লাশ উদ্ধার করে। এ ব্যাপারে ওই দিন রাত ১০টার দিকে তাদের ছেলে সুমন বিশ্বাস বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে নেত্রকোনা মডেল থানায় একটি খুনের মামলা দায়ের করেন। এরপর মামলাটি গোয়েন্দা বিভাগে হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু কোনও কিনারা না পাওয়ায় মামলাটি পিবিআইর কাছে হস্তান্তর করা হয়। প্রায় সাত মাস তদন্ত শেষে পুলিশ মামলার আসামিদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

Print Friendly, PDF & Email