|

টাঙ্গাইলে স্কুলছাত্রীকে গণধর্ষণ, সালিশে জমি ও টাকায় আপোষের চেষ্টা

প্রকাশিতঃ ১০:২৩ পূর্বাহ্ণ | সেপ্টেম্বর ০৫, ২০১৮

ডেস্ক রিপোর্ট, ভালুকার খবর: টাঙ্গাইলের মধুপুরে ১০ম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রীকে গণধর্ষণ করা হয়েছে। ঘটনাটি স্থানীয় ইউপি মেম্বরের নেতৃত্বে সালিশ বৈঠকে ৫ লাখ টাকা ও ৩০ শতাংশ জমির বিনিময়ে আপোষের নামে আলামত নষ্ট করে মামলা করতে বিলম্ব করানোরও অভিযোগ উঠেছে।

মধুপুর থানা পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা যায়, মধুপুর উপজেলার মহিষমারা গ্রামের সুনাগঞ্জ গারোবাজার পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ছাত্রীকে স্কুলে যাওয়া আসার পথে মাঝে মধ্যেই মহিষমারা (মণ্ডলপাড়া) গ্রামের মো. হযরত আলীর ছেলে আরিফ হোসেন (২০), আয়েন উদ্দিনের ছেলে আনোয়ার হোসেন (৩০) ও মৃত আ. রশিদের ছেলে শফিকুল ইসলাম (৩২) উত্যক্ত ও কুপ্রস্তাব দিতো। এতে ওই স্কুলছাত্রী তাদের ওই নোংরা প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে উল্লেখিত তিন বখাটে মেয়েটি ফুফুর বাড়িতে যাওয়ার পথে মহিষমারা গ্রামের সিংহমারী চাওনা নামক স্থানে পৌঁছলে তাকে ঝাপটে ধরে আকাশমনি বাগানে নিয়ে উড়না দিয়ে মুখ বেঁধে জোরপূর্বক পর্যায়ক্রমে গণধর্ষণ করে। গণধর্ষণের পর ওই স্কুলছাত্রীকে অজ্ঞান অবস্থায় ফেলে রেখে ধর্ষণকারীরা পালিয়ে যায়। গত ১৫ আগস্ট এ ন্যাক্কারজনক ঘটনাটি ঘটে। এমতাবস্থায় কিছুক্ষণ পর গণধর্ষণের শিকার ওই স্কুল ছাত্রীর জ্ঞান ফিরে এলে মুখের বাঁধন খুলে চিৎকার দেয়। তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে ওই স্কুলছাত্রীর বাবা মেয়ের কাছে ঘটনা শুনে মামলা করার উদ্যোগ নিলে প্রভাবশালী ধর্ষকদের প্ররোচনায় স্থানীয় মহিষমারা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বর মুসলিম উদ্দিন ও স্থানীয় কতিপয় মাতাব্বর মীমাংসার নামে গড়িমসি করতে থাকে এবং ওই স্কুল ছাত্রীর বাবাকে মামলা না করতে হুমকি প্রদান করে।

ভিকটিমের বাবা হাসমত আলী জানান, গত রবিবার বিচারের নামে ওয়ার্ড মেম্বর মুসলিম উদ্দিনের বাড়িতে স্থানীয় মাতাব্বর মহিষমারা গ্রামের হায়দার আলী, হযরত আলী, হায়েত আলী, আ. আজিজ, আইজ উদ্দিন, ইদ্রিস আলী ও আলতাবগংরা সালিশ বৈঠকে বসে। বৈঠকে মাতাব্বরগণ গণধর্ষণের জরিমানা হিসেবে ৫ লাখ টাকা এবং ৩০ শতাংশ জমির বিনিময়ে আপোষের সিদ্ধান্ত দেন। এ সিদ্ধান্ত বাদী ও বিবাদী উভয় পক্ষ না মানায় বৈঠক পণ্ড হয়ে যায়।অবশেষে গত মঙ্গলবার ধর্ষিতা ওই স্কুলছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে মধুপুর থানায় ৩ জনের নামে গণধর্ষণের মামলা দায়ের করেন। গণধর্ষণের শিকার ওই স্কুলছাত্রীকে মধুপুর থানা পুলিশ উদ্ধার করে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করেছে।

মধুপুর থানার ওসি মো. সফিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, গণধর্ষণের এ মামলাটিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে মামলার তদন্তভার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো. নজরুল ইসলামকে দেয়া হয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

সুত্র: বাংলাদেশপ্রতিদিন.

Print Friendly, PDF & Email