|

যৌতুক-নির্যাতনে ‘প্রায় পাগল’ রেহানা

প্রকাশিতঃ ৩:২০ অপরাহ্ণ | সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৮

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি: রেহানা খাতুন। বয়স ২৭ বছর। ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার দিনমজুন ইসলাম মিয়ার কন্যা। বিগত প্রায় ৮ বছর আগে রেহানা দেখতে বেশ সুন্দরী ও রূপবতী হওয়ায় আগ্রহ ভরে পুত্রবধূ করে ঘরে তুলে ছিলেন পার্শ্ববর্তী সদর উপজেলার চূড়খাই নামাপাড়া গ্রামের বিত্তবান সউদী প্রবাসী বাদল মিয়া। সুখেই চলছিলো রেহানার দাম্পত্য জীবন। কিন্তু এ সুখ তার বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। নেশাগ্রস্থ স্বামী স্বপন মিয়ার (৩০) চোখে দিনে দিনে বিষ হয়ে উঠে রেহানা। বাড়তে থাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। তবুও দুঃখ-কষ্ট আগলে রেখেই সংসার করছিল রেহানা। এরই মাঝে তাদের ঘর আলো করে আইমুন (৪) ও আরিশা (২) নামক পুত্র এবং কন্যা সন্তানের জন্ম হয়।

ভুক্তভোগী রেহানার পিতা ইসলাম মিয়া জানান, সম্প্রতি রেহানার স্বামী স্বপন মিয়া বিদেশ যাবে বলে দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। কিন্তু আর্থিক ভাবে আমি স্বচ্ছল না হওয়ায় ওই টাকা আমি দিতে পারিনি। এতে স্বপন মিয়া ক্ষিপ্ত হয়ে গত শুক্রবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতে আমার মেয়ে রেহানার মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। পরে রেহানাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে অবস্থায় সঙ্কটাপন্ন হওয়ায় চিকিৎসকরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে।

ইসলাম মিয়া আরো জানান, ডাক্তারা বলেছেন রেহানার মাথার খুলি কেটে গেছে। অপারেশন করে ৭/৮দিন চিকিৎসার পর তারা ছুটি দিয়ে দেয়। বলেছে, তিন মাস পর আবার ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে। কিন্তু মাথায় আঘাত পাওয়ার পর থেকে মেয়ে আমার পাগল অবস্থা। ক্ষনে ক্ষনে আবোল-তাবোল বলে। আমি গরীব মানুষ। মেয়ের সেবাশুশ্রা আর ঔষধ কেনার চিন্তায় এখন আমি দিশেহারা।

কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ সূত্র জানায়, ঘটনার পরদিন গত শনিবার (৮ সেপ্টেম্বর) ভুক্তভোগীর পিতা ইসলাম মিয়া বাদি হয়ে এ ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামী স্বপন মিয়াসহ ৪ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই উজ্জল সাহা জানান, মামলা দায়েরের দিনই একজন আটক করে কারাগারে পাঠানো হলে দুইদিন পর সে জামিনে ছাড়া পেয়ে যায়। তবে অন্য আসামীরা পলাতক আছে। তাদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email