|

ভালুকায় বিভক্ত ইউনিয়ন আওয়ামীলীগকে ঐক্যবদ্ধ করতে আ‘লীগ নেতার খোলা চিঠি

প্রকাশিতঃ ৫:২৩ অপরাহ্ণ | জানুয়ারি ০৮, ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক, ভালুকার খবর: ভালুকা উপজেলা ১০নং হবিরবাড়ি ইউনিয়নের ভিবক্ত আওয়ামীলীগকে ঐক্যবদ্ধ করতে সাবেক ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এ এস এম শাখাওয়াত হোসেন সেলিম জেলা ও কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের হস্থক্ষেপ কামনা করে একটি খোলা টিঠি লিখেছেন। লিখাটি গোটা উপজেলার সর্ব মহলে আলোচিত হয়েছে। খোলা চিঠিটি হুবুহু নিন্মে তুলে ধরা হলোঃ-

মুজিবীয় শুভেচ্ছা নিবেন,
আমি এ এস এম সাখাওয়াত হোসেন সেলিম, সাবেক সভাপতি- হবিরবাড়ী ইউনিয়ন ছাত্রলীগ, সাবেক যগ্ম আহবায়ক ও বর্তমান যুগ্ম সাধারন সম্পাদক- ভালুকা উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবকলীগ অত্যন্ত ভারাক্রান্ত মন নিয়ে ভালুকায় আওয়ামীলীগের শক্তিশালী ঘাঁটি নামে খ্যাত হবিরবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের বর্তমান সাংগঠনিক অবস্থার প্রেক্ষিতে এবং সৃষ্ট কাঁদা ছুড়া-ছুড়িতে আওয়ামীলীগের সুনাম-ঐতিহ্য- গৌরব তথা বর্তমান সরকারের উন্নয়নের সমস্ত অর্জন ধুলিস্যাতের হাত থেকে রক্ষা কল্পে বিভক্ত আওয়ামীলীগকে ঐক্যবদ্ধ আওয়ামীলীগে পরিণত করতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপ কামনায় দুটি কথা তুলে ধরার নৈতিক প্রয়োজন অনুভব করছি।

প্রিয় নেতৃবৃন্দ,
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে সফল রাষ্ট্র নায়ক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরন্ত শেখ হাসিনা টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার প্রধান হিসাবে রূপকল্প ২০২১ এবং ২০৪১ বাস্তবায়নে দেশের অভুতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত করার পাশাপাশি সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য তৃণমূল পর্যায়ে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সম্মেলন সম্পন্ন করার জোড়ালো তাগিদ দিয়েছিলেন।

এই তৃণমূল পর্যায়ে সম্মেলনের প্রারম্ভিকতায় হবিরবাড়ী ইউনিয়নে আমরা পেলাম- নিজেদের প্রভাব প্রতিপত্তি বিস্তারের স্বার্থে আদর্শের দোহাই দিয়ে আস্থা-অনাস্থার মধ্য দিয়ে দুটি বিভক্ত আওয়ামীলীগ, একে অন্যের প্রতি প্রকাশ্যে চরম বিষেদাগার, ব্যক্তি পর্যায়ে কদর্যপূর্ণ মন্তব্য, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চরম বেয়াদবীপূর্ণ আচরণ যাতে পারষ্পরিক শ্রদ্ধাভক্তি ও স্বাভাবিক সৌজন্যতার লেশ মাত্রও নেই। জাতীয় প্রোগ্রামগুলোতে আলাদা আলাদা মিছিল মিটিং মাইকিং, কখনো কখনো অপ্রীতিকর ঘটনারও অবতারণা ঘটছে যা সাধারন জনগনের হাস্য তামাসার বিষয়ে পরিণত হচ্ছে এবং বিরোধী পক্ষের লোকজনের তাতে আগুনে ঘী ঢালার হাতিয়ার হিসেবেও কাজ করছে। উদ্ভুত পরিস্তিতি আওয়ামীলীগের ঘাঁটি ঐতিহ্যবাহী হবিরবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের জন্য খুবই অশনি সংকেত।

খাঁটি আওয়ামীলীগ অন্তপ্রাণ মানুষ যারা বিদ্যমান কোন গ্রুপেই নেই তারা সহ সচেতন শিক্ষিত সমাজ গভীর উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার সাথে মাননীয় প্রধানন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে ম্লান ও তাঁর সুদৃঢ় সাংগঠনিক কাঠামো তৃণমূলকে দূর্বল করার প্রয়াস হিসাবে হবিরবাড়ী আওয়ামীলীগকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য এইসব অনাকাঙ্খিত ঘটনাকে একটি গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে মনে করছে।

বিভক্ত দুটি গ্রুপের শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ, ওয়ার্ড পর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ সহ সযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী যখন আওয়ামীলীগের চরম দুঃসময় তথা বিএনপি জামাত জোট সরকারের চরম প্রতিকূল পরিবেশে দলীয় বিশৃঙ্খল অবস্থায় ঐক্যবদ্ধ আওয়ামীলীগের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, আন্দোলন-লড়াই-সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন এবং হামলা-মামলা ও নির্যাতন নিপীরণের সম্মূখীন হয়েছেন। পরবর্তীতে প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার জন্য দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। অতীতে অনেক ঘাত প্রতিঘাত পেরিয়ে আসলেও এইরকম কদর্যপূর্ণ বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে কখনো পড়তে হয়নি।

উদ্ভুত অবস্থায় আমার প্রশ্ন হচ্ছে-

 আমাদের উর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দ এখনো পর্যন্ত কেন উপরোক্ত পরিস্থিতির কোন সাংগঠনিক সুষ্ঠ সমাধান দিতে পারছেন না । এর সমাধান কি আমাদের নেতৃবৃন্দের হাতে নেই?
 আওয়ামীলীগকে বিভক্ত করে রাখলে কারা লাভবান হবেন বা হচ্ছেন ?
 কারা এর পিছনে ইন্দন দিচ্ছে । দলের ভিতরে ঘাপটি মেরে থাকা এসব সুবিধাবাদী ইন্দন দাতাদের খোজে বের করতে হবে। যাদের কারণে হবিরবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ আজ এই দৈন্যদশায় পতিত হওয়ার উপক্রম হচ্ছে।

হবিরবাড়ীর আওয়ামী জনতা যারা কোন পদ পদবীর প্রত্যাশা করে না, যারা ব্যক্তি স্বার্থ চিন্তা না করে দলের জন্য নিবেদিত হয়ে কাজ করতে বদ্ধ পরিকর তাদের কাছে এসব সংকট নিরসন কল্পে উর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দের প্রয়োজনে আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী গণমানুষের আস্থার সর্বশেষ ঠিকানা আমাদের অভিভাবক বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভাপতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপের দাবী জোড়ালো থেকে আরো জোড়ালো হচ্ছে।

পরিশেষে বলতে চাই,
বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উদযাপন সমাগত প্রায়। মাননীয় প্রধানন্ত্রী তথা আওয়ামীলীগ সরকার কর্তৃক বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ২০২০ ও ২০২১ সালে “মুজিব বর্ষ” উদযাপনের প্রাক্যালে আওয়ামীলীগকে আরো সুসংগঠিত ও ঐক্যবদ্ধ রাখার কোন বিপল্প নেই। আমরা খাঁটি ও ঐক্যবদ্ধ আওয়ামীলীগ চাই। শিল্প কারখানা সমৃদ্ধ হবিরবাড়ী ইউনিয়নের সম্ভাবনা যেমন অসীম তেমনি রয়েছে অনেক চ্যালেঞ্জ ও প্রতিবন্ধকতা। তরুন সমাজ তথা শিক্ষিত বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি এই ইউনিয়নের জনসাধারনের সার্বিক জীবন মানের উন্নয়ন কল্পে বর্তমান সরকারের পাশাপাশি জনবান্ধব দল হিসাবে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দেরও যথাযথ দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে হবে।

এমতাবস্থায় আসুন আমরা সকল ভেদাভেদ ভুলে উর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দের সাংগঠনিক সঠিক পরামর্শে আমরা ঐক্যবদ্ধ আওয়ামীলীগের পতাকা তলে একত্রি হই। “ঐক্যবদ্ধ আওয়ামীলীগকে কেউ হারাতে পারে না” এই মূলমন্ত্রে উজ্জেবিত হয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে আরো বেগমান করতে প্রত্যেকের অবস্থান থেকে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করি এবং ষড়যন্ত্রকারীদের ঘৃণ অপচেষ্টা ব্যর্থতায় পর্যবশিত করি। জয় আমাদের হবেই হবে।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।

পুনশ্চ ঃ উর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দকে অনতিবিলম্বে অত্র খোলা চিঠির আলোকে ঐক্যবদ্ধ আওয়ামীলীগ গঠনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য বিনীত অনুরোধ করছি।

Print Friendly, PDF & Email