ভালুকার ডায়াগনস্টিক সেন্টাগুলোতে সেবার নামে হচ্ছে শুধুই বানিজ্য
প্রকাশিতঃ ৫:১১ অপরাহ্ণ | মে ১২, ২০১৮

স্টাফ রিপোর্ট, ভালুকার খবর: ভালুকায় ডায়াগনস্টি সেন্টাগুলোতে সেবার নামে হচ্ছে শুধুই বানিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। ভালুকা পৌর সদরে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে অসংখ্য ডায়াগনস্টিক সেন্টার। ওইসব সেন্টারের অধিকাংশই অনুমোদনবিহীন। কোন কোনটির অনুমোদন থাকলেও মানছে না কোন নিয়ম।
সরকারি নিয়ম-নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নিজেদের পকেট ভারী করতে জনসাধারণকে বানাচ্ছে বলির পাঠা। আর তাদের এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে সরকারি-বেসরকারি চিকিৎসক এক শ্রেণির গ্রাম্য ডাক্তার। সাধারণত জ্বর থেকে শুরু করে যে কোন রোগের শতকরা ৪০ ভাগ কমিশনের বিনিময়ে রোগ নির্ণয়ে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামক বাণিজ্যিক কেন্দ্রে।
ভালুকা উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও অনেক রোগী বিভিন্ন টেস্ট করতে হাসপাতাল গেইটে অবস্থিত ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে যায়। কিন্তু মল-মূত্র ও রক্তসহ অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা হাসপাতালে স্বল্প খরচে করা যায়। কেন হাসপাতালের রোগীরা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বাইরে যায় এই তথ্য অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ডায়াগনস্টিক সেন্টার কর্তৃক নিযুক্ত দালাল ভিবিন্ন ভাবে ভুল বুঝিয়ে নিয়ে যায় ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। বিনিময়ে দালাল পায় ৪০ থেকে ৬০ ভাগ কমিশন।
তাছারা হাসপাতালের কর্মরত কিছু অসাধু ল্যাব টেকনিশিয়ানরা তাদের পকেট ভারী করতে রোগীদেরকে পাঠিয়ে দিচ্ছে বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। আর ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকরা এই সুযোগে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে অসহায় রোগীদের কাছ থেকে। এতে গরিব রোগীরা পড়ছে বিপাকে।
শুধু তাই নয়, এখন ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে বিভিন্ন নামি-দামি চিকিৎসক রোগী দেখছেন। এখানেও আছে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য চিকিৎসকদের কমিশন। তাই বিভিন্ন চিকিৎসক তাদের কাছে সেবা নিতে আসা রোগীদের প্রয়োজনের বাইরেও নানান পরীক্ষা-নিরীক্ষা দিয়ে থাকেন। আর ওই সেন্টারগুলোতে রোগী নিয়ে আসার জন্য রয়েছে একঝাঁক দালালচক্র।
ভালুকায় অবস্থিত ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো “মেডিক্যাল প্র্যাকটিস এ্যাক্ট ১৯৮৩’র” আইন একবোরেই মানছেন না। হাতুড়ে বা শিক্ষারত অপারেটর ও প্যাথলজিস্ট দিয়ে চলছে অধিকাংশ ডায়াগনস্টিক সেন্টার। যার ফলে অনেক সময় রোগ নির্ণয়ে রোগীরা পাচ্ছেন না সঠিক ফলাফল। আর এ অসম্পূর্ণ ফলাফলের উপর ভিত্তি করে চিকিৎসা দেয়ায় রোগীর জীবন হুমকির মুখে পড়েছে।
সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয় হচ্ছে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে বেশ কয়টি হাতুড়ে টেকনিশিয়ান দ্বারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আগে থেকে স্বাক্ষর করা প্যাডে রিপোর্ট প্রদান করা হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ব্যবহার করা হচ্ছে পুরাতন নিম্নমানের যন্ত্রপাতি ও রি-এজেন্ট। সেন্টারগুলোর নেই কোন নিজস্ব ভবন। সব অনিয়ম যেন অর্থের কাছে নিয়মে পরিণত হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মো. একরামুল্লাহ ভালুকার খবরকে জানান, ইচ্ছা থাকা পরও আমরা অনেক কিছু করতে পানিনা। অতি দ্রুত এসব বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।