ধোবাউড়ায় নিজ বাড়ি ফিরল প্রাণহীন রোজিনা
প্রকাশিতঃ ১১:১২ অপরাহ্ণ | এপ্রিল ২৯, ২০১৮
এদিকে, রোজিনার মরদেহ গ্রামের বাড়িতে অ্যাম্বুলেন্স যোগে পৌঁছায় সন্ধ্যা ৬টার দিকে। এরপরই শোকে ভারি হয়ে ওঠে ভারতীয় সীমান্ত ঘেঁষা গারো পাহারের পাদদেশের মেঠো পথ ছোঁয়া সবুজ শান্ত গ্রামটি। মেয়ের মরদেহের পাশে বসে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন মা রাবেয়া খাতুন। শোকে পাথর বাকরুদ্ধ বাবা রসুল মিয়া। ছোট ছোট ভাই-বোনগুলোও রোজিনার মরদেহের পাশে বসে কাঁদছিল অঝোরে।
অপরদিকে, স্বজনদের বুকফাটা কান্না আর আহাজারিতেও শোকাবহ দৃশ্যের অবতারণ হয়।
রোজিনার চাচা দুলাল মিয়া জানান, এমন মৃত্যু মেনে নেয়া যায় না। প্রাণ তো গেলোই। পা টিও ফেরত দিল না। পা ছাড়াই দাফন করতে হচ্ছে আমাদের। এশার নামাজের পর নিজ বাড়ির উঠানেই রোজিনার জানাজা সম্পন্ন হয়। পরে ঘোঁষগাঁও কবরস্থানে শায়িত করা হয় তাকে।
পারিবারিক সূত্র জানায়, গরিব মা-বাবার দ্বিতীয় সন্তান রোজিনা। ৯ সদস্যের সংসারের হাল ধরতে আট বছর আগে ঢাকায় গৃহকর্মীর কাজ নেন রোজিনা। বছরখানেক আগে ছোট বোনকেও ঢাকায় এনে গৃহকর্মীর কাজ জুটিয়ে দেন। দুই বোনের আয়েই তাদের সংসার চলছিল। কিন্তু রোজিনার অকালে চলে যাওয়ায় এখন ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা গোটা পরিবার।
রাজধানীর বনানীতে বিআরটিসি দ্বিতল বাসের চাপায় চলতি মাসের ২১ তারিখ রাতে বনানীতে গৃহকর্মী রোজিনা আক্তারের ডান পা থেঁতলে যায়। পরে অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (পঙ্গু হাসপাতাল) নেওয়া হয়। সে রাতেই অস্ত্রোপচার করার পর ডান পায়ের উরু পর্যন্ত কেটে ফেলা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে ২৫ এপ্রিল তাকে ঢামেক হাসপাতলে বার্ন ইউনিটের হাইডিপেন্ডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) ভর্তি করা হয়। পরে তার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি ঘটলে তাকে আইসিইউ নেওয়া হয়। সেখানেই রবিবার সকাল ৬টা ৫৫ মিনিটে শেষ নিঃশাষ ত্যাগ করেন তিনি।