হালুয়াঘাটে বর্ষাকালে নৌকা আর শীতকালে বাঁশের সাঁকোই একমাত্র ভরসা এই গ্রামে
প্রকাশিতঃ ১১:১৯ অপরাহ্ণ | মে ১৬, ২০১৮

হালুয়াঘাট প্রতিনিধি: হালুয়াঘাট উপজেলার ৬নং বিলডোরা ইউনিয়নের এ পাড়ে রহেলা ঐ পাড়ে আতুয়াজঙ্গল মাঝখানে রামখালী নদীর উপর ব্রীজ না থাকায়,নদীর উপর স্থানীয়দের উদ্যোগে নির্মিত বর্ষাকালে নৌকা আর শীতকালে বাঁশের সাঁকোই এপার এবং ওপারের প্রায় ২০ গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার মানুষের নদী পারাপারের একমাত্র ভরসা।
প্রতিদিন নৌকা দিয়েই স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীসহ হাজার হাজার মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করলেও এখানে ব্রীজ নির্মাণের উদ্যোগ গৃহীত হয়নি স্বাধীনতার ৪৭ বছরেও। ফলে ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো দিয়ে পারাপারের সময় অহরহ দুর্ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে সর্বসাধারণকে।
সম্প্রতি নদী পারাপারের সময় বিলডোরা ইউনিয়নের উলুয়াকান্দা গ্রামের আব্দুল কাদের এর ৭ বছর বয়সী শিশু কন্যা রহেলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণীর শিক্ষার্থী তানজিলা আক্তার ১০ মে বিদ্যালয় থেকে পরিক্ষা দিয়ে সহপাঠিদের সাথে বাড়ি ফেরার পথে রামখালী নদী পার হওয়ার সময় ঝড়ের কবলে পড়ে নদীতে ডুবে যায়।
স্থানীয়রা অনেক খোঁজাখোঁজির পর শিশুটিকে উদ্বার করতে না পেয়ে। পরদিন সকালে গোদারিয়া নদীতে শিশুটির লাশ ভাঁসতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে হালুয়াঘাট থানা পুলিশ লাশটি উদ্বার করেন। রামখালী নদীর আব্দুল খালেকের গোদারাঘাটের উপর ব্রীজ না হওয়ার কারণে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এলাকাবাসী।
জানা গেছে, স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকে বিলডোরা ইউনিয়নবাসী রামখালী নদীর উপর একটি ব্রীজের দাবি করলেও দীর্ঘ সময়ে তা বাস্তবায়ন হয়নি। তাই বর্ষাকালে নৌকা আর শীতকালে নিজেদের উদ্যোগে তৈরি বাঁশের সাঁকোই নদীটি পারাপারের একমাত্র অবলম্বন।
হালুয়াঘাটের,রহেলা,নিশ্চিন্তপুর,খরমবাসা,কৈরাবাশা,বটগাছিয়াকান্দা,আতুয়াজঙ্গল,হাপানিয়া,বলজানা,বাট্রা,ইটাখলা,কৃষ্ঠনগর,নাশুল্যাসহ প্রায় ২০ গ্রামের হাজার হাজার মানুষ ব্যবসা-বাণিজ্য, হাট-বাজার, স্কুল-কলেজ এবং দৈনন্দিন কর্মসংস্থানের কারণে বর্ষাকালে নৌকা আর শীতকালে বাঁশের সাঁকো দিয়ে নদী পেরিয়েই উপজেলা সদরে আসেন। সংশ্লিষ্ট গ্রামগুলোর কৃষকদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য বিক্রিসহ রোগীর জরুরি চিকিৎসার জন্য নৌকা আর নড়বড়ে সাঁকোর উপর দিয়েই যাতায়াত করতে হয়।এমতবস্থায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় এলাকাবাসীর।
স্থানীয় চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন,২০১৬-১৭ অর্থবছরে রামখালী নদীর উপর ১৩০ ফুট দৈর্ঘ্যরে ব্রীজ নির্মানের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রদি প্রস্তাবনা আকারে উপজেলা প্রকোশলী এর নিকট প্রেরণ করেছেন। তিনি সংষিøষ্ঠ দপ্তরে বিষয়টি জানার আহবান জানান। উক্ত ব্রীজটি বর্তমানে সর্বসাধারনের সময়ের দাবী বলে উল্লেখ করেন।
রামখালী নদীর উপর ব্রীজ নির্মানের বিষয়ে উপজেলা প্রকোশলী আবুল কাশেম সিদ্দিকী বলেন, নদীর উপর ব্রীজ নির্মাণের জন্য প্রস্তাবনা আকারে সদর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন ও বরাদ্ধ পেলেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।
স্থানীয়দের দাবী নদীর উপর সেতু নির্মিত হলে ২০ গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার মানুষের পাল্টে যাবে জীবন-যাত্রা। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ব্রীজ নির্মাণে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করার আহব্বান জানান।