|

ভালুকায় প্রতিবন্ধকতাকে জয় করেছে মোটর মেকানিক রুবেল

প্রকাশিতঃ ১:২৯ পূর্বাহ্ণ | জুলাই ২৩, ২০১৮

মো. আসাদুজ্জামান সুমন, ভালুকার খবর: প্রবল ইচ্ছাশক্তি থাকলে যে যেকোন প্রতিবন্ধকতাকে জয় করা যায় তার উদাহরণ হতে পারে ময়মনসিংহে ভালুকার মোটর মেকানিক আইয়ুব হোসেন রুবেল। জন্মগতভাবে শারিরীক ও বাক প্রতিবন্ধী হলেও পরিবারের বোঝা হয়ে থাকেনি সে। চেষ্টা আর পরিশ্রম তাকে এনে দিয়েছে সফলতা। রুবেল এখন এক সফল মোটর মেকানিক। বর্তমানে অন্যের শো-রুমে মেকানিকের কাজ করলেও তার স্বপ্ন নিজের একটি মোটর গ্যারেজ প্রতিষ্ঠার।

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার বোরকা নয়নবাড়ি গ্রামের মো. তাঁরা মিয়ার বড় ছেলে রুবেল। দুই ভাই ও দুইবোনের মধ্যে সবার বড় সে। ভালুকার একটি শো-রুমে প্রায় আট বছর ধরে কর্মরত। রুবেল স্পষ্ট করে কথাও বলতে পারে না। হাঁটা-চলাও স্বাভাবিক নয়। মোটরসাইকেলের ছোট একটা নাট খুলতেও তাকে শরীর পুরোটুকুই নাড়াতে হয়। কিন্তু আট বছরের চেষ্টা তাকে এনে দিয়েছে সফলতা। প্রতিদিন পাঁচশত থেকে এক হাজার টাকা আয় করেন রুবেল। আর আয়ের পুরো টাকাই ভাই-বোনের লেখাপড়ার জন্য তুলে দেন মায়ের হাতে।

সম্প্রতি রুবেলের সঙ্গে কথা হয় প্রতিবেদকের। সময়টা ২০১০ সাল। শুরুর দিকে রুবেল কাজ তেমন পারতেন না। এজন্য অনেক তিরষ্কারও সহ্য করতে হয়েছে তাকে। প্রতিবন্ধী হওয়ার দরুণ বাবা মায়ের রাখা নামের সাথে অনেকেই যুক্ত করেছে ‘ব্যাকা’ নামের বিশেষণ। এতকিছু সত্বেও নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস ছিল রুবেলের। লক্ষ্য ছিল, ভালো একজন মোটরসাইকেল মেকানিক হতে হবে। নিরলস চেষ্টা আর সাধনায় রুবেল আজ দক্ষ এক মোটর মেকানিক। প্রতিবন্ধী হয়েও সুনিপুণ কাজের জন্য পারিশ্রমিকের পাশাপাশি বকশিসটাও কম পান না রুবেল।

অন্যের মোটরসাইকেল মেরামত করে অর্থ আয়ের পাশাপাশি পুরনো, নষ্ট মোটরসাইকেল কিনে মেরামত করে তা ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করেও আয় করেন তিনি।

রুবেল জানান, শারীরিক প্রতিবন্ধী হলেও সমাজের বোঝা হয়ে থাকতে চাই নি। এখন নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। নিজে একটি মোটরসাইকেল গ্যারেজ প্রতিষ্ঠা করার পরিকল্পনার কথাও জানান রুবেল।

 

Print Friendly, PDF & Email