|

ফুলপুরে চুরির অপবাদে সংখ্যালঘু যুবককে পুলিশে সোপর্দ, তোপের মুখে থানা থেকে মুক্তি

প্রকাশিতঃ ৪:২৯ অপরাহ্ণ | আগস্ট ২৯, ২০১৮

মোস্তফা খান, ফুলপুর প্রতিনিধি : ময়মনসিংহের ফুলপুরে চুরির অভিযোগে এক সংখ্যালঘু যুবক গ্রেফতার হয়। পরে থানায় সোপর্দ করা হলে বিক্ষুব্ধ জনতার তোপের মুখে তাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় ফুলপুর থানা পুলিশ।

জানা যায়, গত সোমবার রাতে ফুলপুর উপজেলার ১০ নং বওলা ইউনিয়নে হাতিবান্ধা গ্রামে আওয়ামী লীগ নেতা রাশেদ মেম্বারের কাপড়ের দোকানে চুরি হয়। চুরির অভিযোগে একই গ্রামের স্বপন কুমার পালকে সন্দেহজনকভাবে ধরে নিয়ে তার উপর অমানুষিক নির্যাতন করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা রাশেদ মেম্বার, তার দুই ছেলে জুয়েল ও খোকন, বওলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুখলেস প্রমুখ।

পরে চৌকিদারের মাধ্যমে মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর অভিযুক্ত স্বপনকে থানায় পাঠানো হয়। এ খবর জানার পর এলাকার শতশত নারী-পুরুষ রাস্তায় বিক্ষোভ ও থানা ঘেরাও করে। তাদের দাবি স্বপন চন্দ্র নির্দোষ। সে চুরি করেনি। স্থানীয় নেতারা তাকে চোর সাজিয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করছেন। বর্তমানে সংখ্যালঘু এই অসহায় পরিবারটি এই সব নেতাদের কারণে এলাকায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

এ সময় তারা সাংবাদিককে জানান, তাদের বিশ্বাস ফুলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জনাব একেএম মাহবুব আলম তাদের এলাকার ভাল মানুষ স্বপনকে মুক্তি দিবেন। এ সময় ওসি একে এম, মাহবুব আলম ময়মনসিংহে ছিলেন। থানার দায়িত্বে নিয়োজিত ডিউটি অফিসার তাদেরকে চলে যেতে বলেন। কিন্তু কিছুক্ষণ পরই মুখলেস, জুয়েল, খোকন, আন্দোলনকারী সাবেক যুবলীগ নেতা আশরাফুলসহ কয়েকজনের উপর চড়াও হন।

এ সময় ছবি তুলতে গেলে মুখলেস সহ অনেকেই সাংবাদিককে বাধা দেন। এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকের সাথে অশালীন আচরণ করে বলেন, আপনাদের এখানে নাক গলানোর কিছু নাই। পরে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও প্রভাবশালী নেতা শাহ কুতুব চৌধুরীর চেম্বারের অফিসে ফিরে যান আন্দোলনকারীরা। নির্যাতিত পরিবারের পক্ষ থেকে শতশত মানুষ স্বপনের মুক্তির জন্য এই নেতার কাছে দাবি জানান।

তাদেরই একজন বিদ্যা বিমলা পাল (৫৫) সাংবাদিককে জানান, স্বপন চন্দ্র পাল একজন নীরিহ ছেলে। তাকে এভাবে নির্যাতন করা ঠিক হয়নি। একই কথা বলেন, শুয়া রানী (৩৫), কাজলী ও অর্জুনা রানী। তাদের দাবী, এমন নীরিহ মানুষকে চোর সাজানো ঠিক হয়নি। পরে ফুলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে বৈঠকের পর রাত্র তিনটায় স্বপনকে ছেড়ে দেয়। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা স্বপনকে নিয়ে ঘরে ফিরেন।

এ ঘটনায়, দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার জন্য দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ওসি একেএম মাহবুব আলম বলেন, নিজেদের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝির কারণে এ ঘটনা ঘটে।

Print Friendly, PDF & Email