|

ভালুকায় ছাত্রলীগের কর্মী থেকে “নেতা মোস্তুফা”

প্রকাশিতঃ ৭:৩৬ অপরাহ্ণ | অক্টোবর ২৭, ২০১৮

প্রভাষক আনোয়ার হোসেন তরফদার, ভালুকার খবর: উপজেলার পুরুরা গ্রামের তৎকালীন প্রত্যন্ত অঞ্চলে মধ্যবিত্ত কৃষক আব্দুল মোতালেব ও গৃহিনী মোছা. উছেরা খাতুনের ঘরে জন্ম নেয় গোলাম মোস্তুফা। তার রাজনীতিতে হাতেখরি হয়েছিলো স্কুল ছাত্রলীগের একজন পরিশ্রমী ও বিশ্বস্থ কর্মী হিসেবে।

১৯৬৯ এর ১১দফা আন্দোলনে সফল ভাবে নেতৃত্ব দেন সামনের কাতারে দাঁড়িয়ে। মেধাবী নেতৃত্বগুণ, সাংগঠনিক দক্ষতা, প্রতিবাদী ও বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বরের অধিকারী ছাত্রনেতা হওয়ায় ১৯৭০ সালে তৎকালীন ভালুকা থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হন গোলাম মোস্তুফা।

তিনি ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আফসার বাহিনী‘র প্রধান মেজর আফসার উদ্দিনের সাথে বীর সেনানীর ন্যায় সহকর্মী ছাত্রনেতা, সহপাঠী ও বন্ধুদের নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন মুক্তিযুদ্ধে। বলিষ্ঠ নেতৃত্বগুণের কারণে তাকে পদবিহীন থাকতে হয়নি কখনও ১৯৭৪ সাল হতে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত তৎকালীন থানা ছাত্রলীগের সভাপতি ও ১৯৭৭ সাল হতে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত উপজেলা আওয়ামীযুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। পাশাপাশি উপজেলা আ‘লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন ১৯৭৮ সাল হতে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত। বিচক্ষণ নেতৃত্বগুণের পুরষ্কার হিসেবে উপজেলা আ‘লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন ১৯৯৭ সালে।

দলের ক্রান্তিকালের পরিক্ষিত বঙ্গবন্ধুর সৈনিকের ন্যায় নির্ভুল ও নিখুঁত নেতৃত্ব দিয়ে আজ পর্যন্তু দলের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা আ‘লীগের সদস্যের দায়িত্বে থেকে দলকে সুসংগঠিত রেখেছেন। আ‘লীগের তৃণমূলের নেতাদের ভোটে নির্বাচিত হয়ে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে ২০১৪ সালে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয় আলহাজ্ব গোলাম মোস্তুফা।

প্রায় ৫০ বছরের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে মানুষের ভালবাসায় সিক্ত হয়ে সবচেয়ে বড় ও সম্মানের অর্জন হিসেবে অনেক আগেই নামের সাথে যুক্ত হয়েছে “নেতা” বিশেষণ। ভালুকায় একমাত্র তাঁর নামের আগেই যুক্ত হয়েছে এমন সম্মান সূচক পদবি। হয়েছেন গণমানুষের নেতা। “নেতা” শব্দটি উচ্চারিত হলেই স্থানীয়রা খুব সহজেই বুঝে নেয় আলহাজ্ব গোলাম মোস্তুফার কথাটিই বলা হচ্ছে।

দলীয় সাংগঠনিক নেতা থেকে জনপ্রতিনিধি হয়ে নিজেকে আরোও মেলে ধরেছেন তিনি। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেওয়ার পর উপজেলার যোগাযোগ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারী উন্নয়ন, বাল্য বিবাহ তথা জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখায় ময়মনসিংহ বিভাগের শ্রেষ্ঠ উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে ‘বিভাগীয় কমিশনার সম্মাননা ২০১৭’ সম্মাননা স্মারকটিও এখন তাঁর ঘরে।

দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে সফল ভাবে নেতৃত্ব দেওয়ার ফলে বিগত চারটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থীর নিরঙ্কুশ বিজয় হয়েছে বারবার। বর্তমানে পৌরসভার মেয়র, ২জন ভাইস-চেয়ারম্যানসহ উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানই আ‘লীগের। গোটা উপজেলার প্রধান প্রধান সবগুলো জনপ্রতিনিধির চেয়ারে আ‘লীগের জয়জয়কারের অন্যতম নায়ক হিসেবে কৃতজ্ঞতাভরে নেতা মোস্তুফার নামটিই উচ্চারিত হয় সকলের মুখে।

উপজেলার সবাই একই মতাদর্শ ও দলের হওয়ায় অনেক কঠিন সমস্যার সমাধান ও উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে খুব সহজেই। অল্প দিনেই পাল্টে গেছে ভালুকার গ্রামীণ অবকাঠামোর চিত্র। গোলাম মোস্তুফা উপজেলা চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেওয়ার পর উপজেলায় শতাধিক কিঃমিঃ রাস্তা এইচবিবিকরণ ও কার্পেটিং হয়, এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় উপাসনালয়ে পাঁচ কোটি টাকার অধিক অনুদান দেওয়া হয় তারই আমলে।

সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে আলহাজ্ব গোলাম মোস্তুফার সাথে প্রতিবেদকের কথা হলে তিনি বলেন, ‘আমি আমার সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করেছি সকল শ্রেণী পেশার মানুষেরর মতামত নিয়ে উন্নয়ন ও সমস্যা সমাধানের। বহু ঝড়-ঝাঁপটা উপেক্ষা করে সকলকে একত্রে আগলে ধরে সুসংগঠিত করে রাখতে সক্ষম হয়েছি উপজেলা আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা কর্মীদের। সকলকে নির্দেশনা দিয়েছি জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়নের বার্তা উপজেলা প্রত্যেকটি ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে। নেতা কর্মীদের দাবীর প্রেক্ষিতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আ‘লীগ থেকে ময়মনসিংহ-১১ ভালুকা আসনে আমিও একজন মনোনয়ন প্রত্যাশী’।

তিনি আরও বলেন, ‘আ‘লীগের দুঃসময়ে আমাকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শচ্যুত করতে অনেক লোভনীয় প্রস্তাব দিয়েছে অনেকে। সেইসব লোভনীয় প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় অনেক অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক মিথ্যা মার্ডার মামলাসহ অসংখ্য মামলায় বিনা অপরাধে অন্ধকার কারাগারে কাটিয়েছি মাসের পর মাস। তারপরও কোন শক্তিই এক মুুহুর্তের জন্যও আমাকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শচ্যুত করতে পারেনি। আমি মনোনয়ন পাই আর না পাই জীবনের শেষ নিঃশ্বাসের আগ মুহুর্ত পর্যন্ত জননেত্রী শেখ হাসিনার একজন বিশ্বস্ত কর্মী হিসেবে কাজ করে যেতে চাই’।

গোলাম মোস্তুফার অতীত রাজনৈতিক জীবনের ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় এই আসনে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মাঝে অন্যতম বিচক্ষণ নেতৃত্ব ও উজ্জ্বল রাজনৈতিক প্রোফাইলের অধিকারী তিনিই। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অক্লান্ত ভাবে সরকারী বেসরকারী ছোট বড় সব ধরণের সভা, মিছিল, সমাবেশে উপস্থিত হন যথা সময়ে। যার ফলে এলাকার সুশীল সমাজ, স্বেচ্ছাসেবী, রাজনৈতিক নেতা কর্মীসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট। উপজেলার বেশীরভাগ প্রভাবশালী নেতৃস্থানীয় নেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে আ‘লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশায় দৃঢ় সমর্থন গোলাম মোস্তফার দিকেই।

Print Friendly, PDF & Email