|

গৌরীপুরে মনোনয়ন প্রত্যাশী ১৮ জন

প্রকাশিতঃ ২:০৮ অপরাহ্ণ | অক্টোবর ৩০, ২০১৮

ডেস্ক রিপোর্ট, ভালুকার খবর: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়েছে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের দৌঁড়-ঝাঁপ। প্রার্থীরা অনেক আগে থেকেই রাস্তার মোড়ে মোড়ে ব্যানার, পোস্টার, তোরণ লাগিয়ে জানান দিচ্ছেন তাদের তৎপরতা। এমন একটি আসন ময়মনসিংহের গৌরীপুর।

এই আসন থেকে শুধু আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীর সংখ্যা দেড় ডজন। প্রার্থীরা বলছেন, তারা নিজ নিজ যোগ্যতা বলেই প্রার্থী হয়েছেন। আর জেলার শীর্ষ নেতারা বলছেন, বড় দল বেশি প্রার্থী এটাই স্বাভাবিক।

শিল্প, সংস্কৃতি, ঐতিহ্যের জনপদ হিসেবে খ্যাত ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলা। এ উপজেলা একটি পৌরসভা ও ১০টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এ আসনে মোট ভোটার ২ লাখ ২৬ হাজার ৭২৫ জন। স্বাধীনতা-পরবর্তীকালে এখানে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি সব দলেরই প্রার্থী জয়ী হয়েছেন।

সর্বশেষ ২০১৪ সালে এ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ডা. ক্যাপ্টেন (অব.) মজিবুর রহমান ফকির। ২০১৬ সালের ৩ মে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে দলের ত্যাগী ও প্রবীণ নেতা মুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দিন আহমেদ বিজয়ী হন। সেই নির্বাচনেও ক্ষমতাসীন দলটি থেকে ২২ জন মনোনয়ন প্রত্যাশী কেন্দ্র থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন।

এবারও এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে প্রায় দেড় ডজন নেতা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন।
মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে আলোচনায় আছেন, বর্তমান সংসদ সদস্য নাজিম উদ্দিন আহমেদ, আলোচনায় আছেন জেলা আওয়ামী লীগের দুই সাংগঠনিক সম্পাদক ড. সামীউল আলম লিটন ও শরীফ হাসান অনু, গৌরীপুর পৌরসভার মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সৈয়দ রফিকুল ইসলাম, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ডা. মতিউর রহমান, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলী আহাম্মদ খান পাঠান সেলভী, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজের অধ্যক্ষ ড. এ কে এম আব্দুর রফিক, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য নাজনীন আলম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম মুহাম্মদ আজাদ, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মোর্শেদুজ্জামান সেলিম, ময়মনসিংহ জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা ওরফে ভিপি বাবুল, উপজেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রাবেয়া ইসলাম ডলি, মডেল অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি ও অধ্যক্ষ রুহুল আমিন।

মনোনয়ন প্রত্যাশী বর্তমান সংসদ সদস্য নাজিম উদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশের জন্য যুদ্ধ করেছি। দীর্ঘদিন ধরে দলের হয়ে কাজ করছি। লড়াই সংগ্রামে রাজপথে থেকে আন্দোলন করেছি, জেল খেটেছি। বর্তমানে এ আসন থেকে যারা মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন তাদের দলে কি অবদান আছে?
বঙ্গবন্ধুর ছবি বুকে লাগালেই হবে না, বঙ্গবন্ধুকে বুকে ধারণ করতে হবে। নির্বাচনে জয়লাভের পর থেকেই সভা সেমিনার আর উঠান বৈঠকের মাধ্যমে তুলে ধরছি সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড।

জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সামিউল আলম লিটন। শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মনোনয়নের প্রত্যাশায় দলের হয়ে কাজ করছেন। এবার দল তাকে মূল্যায়ন করবে বলে তার প্রত্যাশা।

এই আসনের সাড়া জাগানো নারী প্রার্থী নাজনীন আলম। ২০১৪ সালের নির্বাচনে দলীয় টিকিট না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে বেশ আলোচিত হন তিনি।

নাজনীন আলম বলেন, ২০১৬ সালের উপ-নির্বাচনেও আমি প্রার্থী ছিলাম। কিন্তু কেন্দ্রের নির্দেশে আমি নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়িয়েছি। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে গৌরীপুরের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে কাজ করছি। সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরছি। আশা করি দল এবার আমাকে মূল্যায়ন করবে।

আলোচনায় আছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি ও সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজের অধ্যক্ষ ড. এ কে এম আব্দুর রফিক। তিনি বলেন, ছাত্র রাজনীতি থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত দলের জন্য কাজ করছি। ভবিষ্যতেও করব। আশাকরি দল আমাকে মনোনয়ন দেবে।

এই আসনের একাধিক সাধারণ ভোটারের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, কেন্দ্রে কোন নেতার সম্পর্ক ভালো সেটা না দেখে তৃণমূলে কোন নেতার সম্পর্ক ভালো এমন নেতাকে মনোনয়ন দেয়ার জন্য দলীয় প্রধানের কাছে অনুরোধ জানান। এ আসনে সব সময় বেশি প্রার্থী থাকে। তবে দুই-চারজন ছাড়া আর কাউকে এলাকায় পাওয়া যায় না। যারা এলাকার মানুষের জন্য কাজ করবে তাদের পাশে থাকবে এমন লোককেই তারা এমপি হিসেবে নির্বাচিত করবেন।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল জানান, গৌরীপুর আসনটি সব দিক দিয়ে সমৃদ্ধ একটি আসন। এই আসনে একাধিক সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্র নেতা রয়েছেন, রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা। এখানে মনোনয়ন প্রত্যাশী বেশি হবে এটাই স্বাভাবিক। তবে তৃণমূলে যাদের সম্পর্ক ভালো তাদের কথাই কেন্দ্রে সুপারিশ করা হবে। তবে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেতে হলে আওয়ামী লীগ পরিবারের সদস্য হতে হবে। তবে কোনো রাজাকার বা যুদ্ধাপরাধী পরিবারের সদস্যকে মনোনয়ন না দেয়ার জন্য কেন্দ্রের হাই কমান্ডের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।

Print Friendly, PDF & Email