|

শিক্ষা খাতে এক লাখ ৩৮ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প

প্রকাশিতঃ ৪:০৯ অপরাহ্ণ | আগস্ট ২৬, ২০১৮

ডেস্ক রিপোর্ট, ভালুকার খবর:

নিবার্চনী বছরে শিক্ষা খাতে একটি মেগা প্রকল্প হাতে নিচ্ছে সরকার। ‘মাধ্যমিক শিক্ষা উন্নয়ন কমর্সূচি’ নামে এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে এক লাখ ৩৮ কোটি টাকা। যৌথভাবে এই প্রকল্পে অথার্য়ন করবে বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। কিছু ব্যয় সরকারের বাজেট থেকে বহন করা হবে। এর আগে দেশের শিক্ষা খাতের ইতিহাসে এত বড় প্রকল্প নেয়া হয়নি। এই কমর্সূচির মাধ্যমে ২০ হাজার স্কুল, ১০ হাজার মাদ্রাসা এবং এক হাজার কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় এক কোটি ৫০ লাখ ছাত্র এবং তিন লাখ শিক্ষক উপকৃত হবে বলে দাবি করা হয়েছে। এই কমর্সূচি বাস্তবায়নের জন্য মাঠপযাের্য় প্রচুর লোকবল নিয়োগ দেয়া হতে পারে। গঠন করা হবে একাধিক বিশেষায়িত কমিটি। শুধু এই কমর্সূচির জন্য পৃথক ‘আথির্ক ক্ষমতা অপর্ণ’ নিদের্শনা জারি করবে সরকার। প্রকল্পটি অথর্মন্ত্রী অনুমোদন দিয়েছেন। চ‚ড়ান্ত অনুমোদনের জন্য এটি প্রধানমন্ত্রীর কাযার্লয়ে পাঠানো হয়েছে। অথর্ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এই কমর্সূচির আওতায় মাধ্যমিক ও মাদ্রাসা উভয় শিক্ষাব্যবস্থার গুণগত মান আরও বাড়ানো হবে। শুধু শিক্ষাথীর্ নয়, শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধিতেও জোর দেয়া হবে। প্রকল্পের মাধ্যমে অবকাঠামো থেকে শুরু করে উপবৃত্তি, প্রণোদনা, বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনায় জবাবদিহিতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা করা হবে। চলতি ২০১৮-১৯ অথর্বছর থেকে শুরু করে ২০২২-২৩ পযর্ন্ত পাঁঁচ বছর মেয়াদে পরিচালনা বাজেটের আওতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। সূত্র জানায়, বিশাল এই কমর্সূচির মোট ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ১৭ দশমিক ২০৮ বিলিয়ন মাকির্ন ডলার। বাংলাদেশি টাকায় যার পরিমাণ দাঁঁড়ায় এক লাখ ৩৭ হাজার ৬৬৭ কোটি ৩১ লাখ টাকা (প্রতি ডলার ৮০ টাকা হিসাবে)। বাজেটের পরিচালন ব্যয় বরাদ্দের আওতায় সরকারের ট্রেজারি থেকে এই কমর্সূচি বাস্তবায়িত হবে। পূবির্নধাির্রত রেজাল্ট ফ্রেমওয়াকের্র আলোকে ডিএলআই অজর্নসাপেক্ষে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা থেকে পুনভর্রণকৃত অথর্ সরাসরি সরকারি কোষাগারে জমা হবে। এই প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক দেবে ৫০ কোটি মাকির্ন ডলার। এডিবি দেবে সাড়ে ২২ কোটি ডলার। বিশ্বব্যাংক ঋণের অতিরিক্ত আরও এক কোটি ডলার জিএফএফ গ্রান্ট কারিগরি সহায়তা হিসেবে দেবে। প্রকল্প ব্যয়ের বাকি টাকা আসবে সরকারি কোষাগার থেকে। এ ছাড়া ব্রিটিশ কাউন্সিল, ইউনিসেফ, ইউনেস্কো, ডিএফআইডি এবং ইউএনএফপিএ এই কমর্সূচিতে কারিগরি সহায়তা দেবে। প্রস্তাবিত এই কমর্সূচিতে মাধ্যমিক পযাের্য়র সাধারণ ও মাদ্রাসা শিক্ষা অন্তভুর্ক্ত হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এই কমর্সূচির সাধারণ শিক্ষা-সংশ্লিষ্ট অংশ বাস্তবায়ন করবে। কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ মাদ্রাসা শিক্ষা-সংশ্লিষ্ট অংশ বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকবে। প্রস্তাবিত মাধ্যমিক শিক্ষা উন্নয়ন কমর্সূচির (এসইডিপি) মূল তিনটি রেজাল্ট এরিয়া রয়েছে। প্রথমত, এনহান্সড কোয়ালিটি অ্যান্ড রেলেভেন্স অব সেকেন্ডারি এডুকেশনের আওতায় কারিকুলাম উন্নয়ন ও শিক্ষাকে শ্রমবাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূণর্ করা। শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা বাড়ানো। বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান ও আইসিটি বিষয়ে শিখন-শেখানো পদ্ধতির উন্নয়ন। পাঠাভ্যাস উন্নয়ন, শিক্ষাথীের্দর মূল্যায়ন ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং শিক্ষাকাযর্ক্রমে আইসিটির ব্যবহার বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন লক্ষ্য অজের্ন কাযর্ক্রম গ্রহণ করা হবে। দ্বিতীয়ত, ই¤প্রæভড একসেস অ্যান্ড রিটেনশনের আওতায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অবকাঠামো উন্নয়ন করা হবে। মাধ্যমিক শিক্ষার সুযোগ ও অংশগ্রহণ বৃদ্ধি (উপবৃত্তি দেয়া, অতিরিক্ত শিক্ষক নিয়োগ ইত্যাদি) করা হবে। সুযোগবঞ্চিত এলাকায় শিক্ষাথীের্দর মাধ্যমিক শিক্ষা সমাপ্তির হার বৃদ্ধির (বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা তথা পুরস্কার, সচেতনতা বৃদ্ধি, বয়ঃসন্ধিকালীন সমস্যা মোকাবেলায় সহায়তা ইত্যাদি) কাযর্ক্রম বাস্তবায়ন করা হবে। তৃতীয়ত, স্ট্রেংদেনেড গভনর্্যান্স, ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড প্ল্যানিংয়ের আওতায় শিক্ষাব্যবস্থার বিকেন্দ্রীয়করণ এবং পরীবিক্ষণ ও মূল্যায়ন ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হবে। প্রকল্প অনুমোদনে চার শতর্ প্রকল্প অনুমোদনের ক্ষেত্রে অথর্ মন্ত্রণালয় থেকে চারটি শতর্ দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, কমর্সূচির মোট ব্যয় এক লাখ ৩৭ হাজার ৬৬৭ কোটি ৩১ লাখ টাকা সম্ভাব্য ব্যয়সীমা হিসেবে বিবেচিত হবে। মধ্যমেয়াদি বাজেট কাঠামোর আওতায় দেয়া ব্যয়সীমার মধ্যে সঙ্কুলানসাপেক্ষে প্রকৃত প্রয়োজনের নিরিখে বাষির্ক বাজেটে প্রস্তাবিত কমর্সূচির জন্য অথর্ বরাদ্দ করা হবে। বিনিয়োগ-সংক্রান্ত কাযর্ক্রমগুলো বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ স্কিমের আওতায় দেয়া হবে। এই কমর্সূচির আওতায় যেসব স্কিম গ্রহণ করা হবে, সেটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সুপারিশ করার জন্য অথর্ বিভাগের একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email