|

বাংলা নববর্ষের আগাম শুভেচ্ছা- কামরুজ্জামান তুহিন

প্রকাশিতঃ ৩:৫৭ পূর্বাহ্ণ | এপ্রিল ০৮, ২০১৮

মেয়ের এইচ,এস,সি পরীক্ষার কেন্দ্র ময়মনসিংহ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ কলেজ। পরীক্ষা হলের পাশেই ক্যান্টিন। ক্যান্টিন চত্বরে একা বসে সময় যেন আর কাটছেই না !

সময় কাটাতে এফবিতে ইচ্ছেমত প্রোফাইলে ঢুকে বন্ধু, বন্ধুর ভাল বন্ধুদের পোস্ট, কমেন্টস, রিয়েক্ট ইত্যাদি দেখছিলাম আর ভাবছিলাম। যতই সময় যাচ্ছিল, এলোমেলো নানা ভাবনায় মনটা অজান্তেই কেমন যেন ভারি হয়ে গেল !

ভাবছিলাম, কোন বিষয় নিয়ে গবেষণা বা অনুসন্ধান করলে ভাল কিছু পাওয়া যায়। কিন্তু এফবি বন্ধুদের প্রোফাইল নিয়ে এ কাজটা না করাই উত্তম। মন ভাল হবার মত কিছু পাওয়ার চেয়ে ভারাক্রান্ত হবার মত অনেক কিছু পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি !

উপলব্দি করলাম, প্রত্যেকটা মানুষের জীবন আলাদা। তার রুচিবোধ, পছন্দ- অপছন্দ, বন্ধু, মানসিকতা, ভাব প্রকাশের মাধ্যম সব কিছুই আলাদা। নিজের পছন্দ মত তাই সব কিছু প্রত্যাশা করাটা বোকামি। তাছাড়া ভাল বন্ধু যেমন আমার কেউ, তারও তো অন্য ভাল বন্ধু থাকতেই পারে। তাই প্রত্যাশার ব্যত্বয় দেখে হতাশ হওয়া বা নিয়ন্ত্রণ করার ইচ্ছেটাও অন্যায়।

এফবিতে বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে দু’ চার লাইনের প্রোফাইল ডাটা দেখে খুউব বেশি কিছু বন্ধুটি সম্পর্কে জানা যায় না। যেখানে খুউব ছোটবেলার বন্ধুদের চিনতেই আমরা মানুষ ভূল করে থাকি। তাই এফবিতে ভাল প্রোফাইল পিক, পোস্ট, মিউচুয়্যাল ফ্রেন্ড, দেয়া তথ্য দেখেই বন্ধু না করে একটু প্রোফাইল, প্রোফাইলের বন্ধুদের প্রোফাইল দেখে নিয়ে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট এক্সেপ্ট করা দরকার। তবে যদি কেবল টাইম পাস করাই মূখ্য হয় তবে, চোখ বন্ধ করেও ক্লিক দিয়ে বন্ধু সংখ্যা বাড়াতে সমস্যা নেই। তবে সংখ্যায় কম হলেও বন্ধু, ভাল বন্ধু জীবনে থাকা প্রয়োজন। আর সে জন্যেই একটু গবেষণা বা অনুসন্ধান করা যেতেই পারে। নইলে অনেক সময় পর ভাল বন্ধুকে বড়ই অচেনা মনে হতে পারে। হতে পারে মনোকস্টের কারণ। হউক সে এফবি ফ্রেন্ড, ফ্রেন্ড তো।

এও ভাবছিলাম, লেবু বেশি চাপলে তেতো হয়ে যায় যেমন, তেমন সুস্বাদু বড়ই বা জাম বর্তা খেতে একটু ভাল করে চাপের প্রয়োজন হয়। সবকিছুতে যেমন অবিশ্বাস থাকা ভাল নয়, তেমনি ঢালাও বা অন্ধের মত বিশ্বাসের ফলও ভাল নয়।

ভাল বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে পারস্পরিক মূল্যায়ন, বিশ্বাস, সহযোগিতা, সম্মান, পরিবর্তনের মানসিকতা, চেষ্ঠা বা মেনে না নিয়ে মনে নেয়ার মানসিকতা, সেক্রিফাইজ- কম্প্রোমাইজ করার মানসিকতা, উদারতার পাশাপাশি সু- নিয়ন্ত্রণ বা কেয়ারিং ম্যান্টালিটি, পছন্দ- অপছন্দের প্রতি যত্নশীল থাকা এবং ভাল- মন্দ সব কিছুই শেয়ারিং করার দ্বায়িত্ববোধ খুবই জরুরী।

সর্বোপরি, টাইম পাসিং ফ্রেন্ডশিপে বয়স কোন বিষয়ই না। তবে ভাল বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে পরস্পরের বয়সের বিষয়টি মাথায় রাখা জরুরি। বয়সের তারতম্যে রুচিবোধ, নির্ভরতা, আবেগ, অনুভূতি, চাওয়া- পাওয়ায় ব্যাপক তারতম্য থাকতে পারে। যদিও প্রচলিত আছে, বন্ধুত্বের মাঝে বয়স কোন বিষয় নয়। আমিও একমত।
তবে ভাল বন্ধু হতে হলে তো ভাল কিছু দিক থাকতেই হবে, ভাল করে ভাবতেই হবে। বয়সের কথাও ভাবতেে হবে।

ধন্যবাদ, সবাই ভাল থাকুন। সুস্থ্য থাকুন।
সংখ্যায় সমৃদ্ধ না হয়ে অন্তত একজন হলেও ভাল বন্ধু জীবনে তৈরী বা সংগ্রহ করুন। ভাল একজন বন্ধুর পোস্ট, লাইক, কমেন্টস বা রিয়েক্ট আপনার জীবনকে পাল্টে দিতে পারে, সমৃদ্ধ করতে পারে। জীবন হতে পারে প্রশান্তিময়।

আবারো ধন্যবাদ। বিশেষ করে এত বড় লিখা কষ্ট করে যারা পড়লেন, তাদের বাংলা নববর্ষের আগাম শুভেচ্ছা  । শুভ নববর্ষ- ১৪২৫.

(লেখকের ফেইসবুক থেকে সংগৃহীত)

উপাধ্যক্ষ

ভালুকা ডিগ্রী কলেজ।

Print Friendly, PDF & Email