|

ত্রিশালের স্যানিটারী ইন্সপেক্টর জেসমিনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের পাহাড়

প্রকাশিতঃ ১০:২৪ অপরাহ্ণ | অক্টোবর ২১, ২০১৯

মো. আসাদুজ্জামান সুমন: ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলা স্যানিটারী ইন্সপেক্টর জেসমিন সুলতানার বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০০১ইং সাল থেকে অদ্যাবধি পর্যন্ত তিনি স্যানিটারী ইন্সপেক্টর হিসেবে কর্মরত থেকে সংশ্লিষ্টদের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলেছেন। যে কারণে ত্রিশালে সরকারের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত কার্যক্রম ভেস্তে যেতে বসেছে।

অভিযোগ রয়েছে, ত্রিশালের সর্বত্রই সকল ছোট-বড় খাদ্যপণ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান, নিম্নমানের ও মান বহির্ভূত খাদ্যপণ্য তৈরি করলেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি এই কর্মকর্তা। এ ক্ষেত্রে তিনি আইনি ফাঁক-ফোকর দেখিয়ে সুবিধা নিয়েছেন।

ত্রিশালের সর্বত্র মানহীন খাদ্যপণ্য উৎপাদক, বিক্রেতারা জনসাধারণকে দিন দিন ধোঁকা দিলেও স্যানিটারী ইন্সপেক্টর জেসমিন সুলতানার কোনো মাথাব্যথা পরিলক্ষিত হয় না। ত্রিশালে নেই নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ এর কোন প্রয়োগও। মাঝে মধ্যে ত্রিশালে লোক দেখানো অভিযান পরিচালিত হলেও খাদ্যের নমুনা পরীক্ষায় দীর্ঘসূত্রিতা দেখিয়ে তা অঙ্কুরেই ধামাচাপা দেয়া হয় ।

খাদ্য প্রস্তুতকারী রেস্তোরাঁ বা বেকারি ও খুচরা বিক্রেতা পরিদর্শনকালে স্যানিটারি ইন্সপেক্টর জেসমিন সুলতানা মোটা অংকের টাকা ঘুষ গ্রহণ করেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। এ ক্ষেত্রে খাদ্য কারখানা পরিদর্শনে খাদ্য পণ্যের নমুনা সংগ্রহে ঘুষের বিনিময়ে বিএসটিআই’র ফিল্ড অফিসারদের শৈথিল্য প্রদর্শন (ক্ষেত্রভেদে স্যানিটারি ইন্সপেক্টর ও ফিল্ড অফিসারগণ মোটা অংকের টাকা ঘুষ নিয়ে থাকেন)।

মাসিক ঘুষের বিনিময়ে স্যানিটারি ইন্সপেক্টর জেসমিন সুলতানা কর্তৃক ত্রিশালের বড় দোকানদার, রেস্তোরা ও বেকারির মালিকের সাথে সমঝোতামূলক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হোটেল ব্যবসায়ী জানান, তিনি আইনের ভয় দেখিয়ে মূল্য পরিশোধ না করে নমুনা সংগ্রহ এবং ব্যক্তিগত ভোগে ব্যবহার, পরিদর্শন কার্যক্রমে নিজ উদ্যোগে সোর্স নিয়োগ এবং সোর্সদের সুবিধা প্রদানের খরচও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নিকট হতে নিয়ম বহির্ভূতভাবে আদায় করে থাকেন।

অভিযোগ রয়েছে, জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরীক্ষাগার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে স্যানিটারি ইন্সপেক্টর জেসমিন সুলতানার যোগসাজসে ও নমুনা পরীক্ষা না করে ঘুষ ও উপঢৌকনের বিনিময়ে সনদ প্রদান করে থাকেন।

ত্রিশাল উপজেলা শহরসহ বিভিন্ন হাট-বাজারের বেকারী, মিষ্টান্ন ভান্ডার ও খাবারের হোটেল মালিকদের অভিযোগ, বছরের পর বছর বিভিন্ন দোকান থেকে নেয়া উৎকোচের টাকায় জেসমিন সুলতানা একাধিক বাড়ির মালিক হয়েছেন।

ত্রিশালের সমাজকর্মী রফিকুল ইসলাম জানান, ‘এই কর্মকর্তার পরিবারের লোকজন জামায়াত সমর্থিত। তারপরও কিভাবে অভিযোগের অন্তহীন পাহাড় নিয়ে দীর্ঘ দেড় যুগ ধরে একই উপজেলায় কর্মরত রয়েছেন’।

ত্রিশাল উপজেলা স্যানিটারী ইন্সপেক্টর জেসমিন সুলতানা বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ সম্পর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। আমার প্রতিপক্ষরা আমার বিরুদ্ধে এমন অপপ্রচার চালাচ্ছে’।

Print Friendly, PDF & Email