ভালুকার শ্রমিকবান্ধব সফল শিল্প কর্মকর্তা মোকলেসুর রহমান
প্রকাশিতঃ ২:৫১ অপরাহ্ণ | জানুয়ারি ০৫, ২০১৯

প্রভাষক আনোয়ার হোসেন তরফদার, ভালুকার খবর: ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার কাঠালী গ্রামের শেফার্ড গ্রুপের ডিজিএম তিনি। একজন দৃঢ় আত্মপ্রত্যয়ী, প্রজ্ঞাবান, প্রতিষ্ঠিত, কর্মচঞ্চল, শ্রমিকবান্ধব শিল্প কর্মকর্তা মো. মোকলেসুর রহমান। বিনয়, সততা, মেধা, অধ্যবসায় ও দূরদর্শীতার কারণে শেফার্ড গ্রুপ আজ উন্নতির চরম শিখরে।
শতভাগ বিদেশী মালিকানাধীন গ্রুপটির কর্তৃপক্ষের কাছে নিজের কর্মগুণে তিনি একজন বিশ্বস্থ কর্মকর্তা। সদা হাসো্যজ্জ্বল ও মমতাময়ী ব্যবহারের ফলে তিনি কারখানার শ্রমিকদের নিকট একনিষ্ঠ শ্রদ্ধার পাত্রই নয়, আস্থাভাজন অভিভাবকও বটে। শুধু শেফার্ড গ্রুপ ও গ্রুপের কর্মকর্তা কর্মচারি ছাড়াও শিল্পসমৃদ্ধ ভালুকার রাজনীতিবিদ, প্রশাসন, সুশীল সমাজ, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ সকল সেক্টরেই তাঁর সুনাম ও গ্রহণযোগ্যতা সর্বজনবিদিত।
১ডিসেম্বর ২০০১ সালে ‘শেফার্ড ইন্ডাষ্ট্রিজ লিঃ’ নামের বেসরকারী প্রতিষ্ঠানটিতে এক্সিকিউটিভ পার্সোনেল অফিসার পদে যোগদান করেছিলেন মোকলেসুর রহমান। ঢাকার ই.পি.জেড. এলাকায় ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত শেফার্ড ইন্ডাষ্টিজ লিঃ নামের প্রতিষ্ঠানটি তাইওয়ানের যুবক মি. কাও ওয়েন ফু‘র ব্যাক্তিগত উদ্যোগে নির্মিত হয়। টগবগে যুবক মি. কাও ওয়েন ফু‘র ইনভেস্টমেন্ট ও সঠিক দিক নির্দেশনার ফলে বর্তমানে শেফার্ড গ্রুপের ফ্যাক্টরির সংখ্যা মোট ৪টি। আরোও কয়েকটি কারখানা স্থাপনের প্রস্তুতি চলছে গ্রুপটির। সবমিলিয়ে শেফার্ড গ্রুপে সারাদেশে কাজ করছেন প্রায় ৩হাজার কর্মী। বিদেশে পণ্য রপ্তানি করে আয় করছে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা। যা, জি.ডি.পি. অর্জনে রাখছে ব্যাপক ভূমিকা। তাছাড়া দেশের শেয়ার বাজারেও রয়েছে এর বিস্তৃতি।
কালের পরিক্রমায় ভিন্ন ভিন্ন কলেবরে বাড়তে থাকে শেফার্ড গ্রুপের পরিধি। ভালুকায় শেফার্ড গ্রুপের বিস্তার ঘটে অনেকটা মোকলেসুর রহমানের হাত ধরেই। তাছাড়া আরও কয়েকজন কর্মকর্তার ভূমিকাও অনস্বীকার্য।
ফরিদপুর জেলার ভাংগা উপজেলার আব্দুর রাজ্জাক মাতাব্বর ও কোমেলা বেগমের কোল জুড়ে ১জানুয়ারী ১৯৭৭ সালে জন্ম গ্রহণ করেন বর্তমানের সফল এই শিল্প কর্মকর্তা। ৪ভাই ২ বোনসহ মোট ৮জনের সংসারে বেড়ে উঠেন তিনি। কৃতিত্বের সাথে স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে পড়াশুনা শেষ করে ভর্তি হন ঢাকায়। পরে ক্যালকাটা ইউনিভার্সিটি থেকে ‘ল’ তে পি.জি কমপ্লিট করে কর্মজীবনে প্রবেশ করেন তিনি।
মোকলেসুর রহমান ছাড়াও অপর ৩ভাই সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করছেন দেশের উচ্চপদস্থ পর্যায়ে। ব্যাক্তিজীবনে প্রাথমিক স্কুল শিক্ষিকা স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস লাবনী ও ২কন্যাসহ ৪জনের সংসার তাঁর।
শেফার্ড গ্রুপে কতটুকু সফলতা ও দায়িত্বশীলতার সাথে তাঁর দায়িত্ব পালন করছেন তা ফ্যাক্টরীর বিভিন্ন শ্রেণীর শ্রমিক ও কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেই জানা যায়। শ্রমিকদের চোখে মমতাময়ী ও ন্সেহশীল অভিভাবক হিসেবে যতটুকু শ্রদ্ধার পাত্র হয়েছেন, তারচেয়ে বেশি চৌকশ ও বিচক্ষণ কারখানা প্রধানের আস্থাও কুঁড়িয়েছেন প্রশাসনিক ও অফিস কর্মকর্তাদের কাছে।
আন্তরিক ও সদা হাসো্যজ্জল ব্যাক্তিত্বের অধিকারী মোকলেসুর রহমানের এখানে সুদীর্ঘ কর্মকালের ফলে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গের সাথে রয়েছে ব্যাপক সুসম্পর্ক। ফ্যাক্টরীর আশপাশের এলাকাসহ উপজেলার অনেকের পারিবারিক অনুষ্ঠানের অতিথি হিসেবেও তাকে দেখা যায়। তাছাড়া উপজেলার সরকারী বেসরকারী অনুষ্ঠানেও তাঁর উপস্থিতি সরব। যার ফলে উপজেলার সকল শ্রেণী পেশার মানুষের সাথে গড়ে উঠেছে তাঁর গভীর সখ্যতা।
জনাব রহমান সম্পর্কে ফ্যাক্টরীর শ্রমিক ডাইয়িং সেকশনের সুপার ভাইজার তোফাজ্জল মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, স্যার আমাদের এই কারখানার সকল শ্রমিক ও কর্মকর্তাদের একটি পরিবারের মত আগলে রেখেছেন। তিনি আমাদের অফিস প্রধানের পাশাপাশি একজন দায়িত্বশীল অভিভাবকও বটে।
তোফাজ্জলের কথার সুর টেনে ঝাড়ুদার হাসি আক্তার বলেন, “স্যার গরিব দুঃখীগর কষ্ট বুঝেন। আমগর মিলের বড় সাব হিসেবে যেরুম শাসন করে আবার বিরাট আদরও হরে। স্যার আমগর সুবিধা অসুবিধার কতা মন দিয়া হুনে, পরে কি করতে অইবো হেইডার ভালা পরামর্শও দেয়। সুহে দুহে সবসমই স্যার আমগর সবার পাশে থাহে। আল্লাহ আমগর স্যাররে অনেকদিন বাঁচাইয়া রাহুক”।
কোয়ালেটি ইনচার্জ বিপ্লব হোসেন বলেন, এমন একজন অফিস প্রধানের আন্ডারে কাজ করতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি। দেশের সকল বেসরকারী অফিসের বসেরা যদি আমাদের স্যারের মত হতেন তাহলে কোন চাকুরীজিবীই বেসরকারী প্রতিষ্ঠান থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতেন না।
ফ্যাক্টরীর সিকিউরিটি ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “আমি আর্মিতে চাকুরী করেছি, বিদেশে থেকেছি কিন্তু এখন পর্যন্ত এমন অফিস প্রধান দেখিনি। শ্রমিকরা ভুল করলে স্যার গায়ে হাত বুলিয়ে কাজ করতে বলেন”। ৫২বছর বয়সি মুস্তাফিজুর রহমান তাঁর বসের বর্ণনা দিতে গিয়ে একপর্যায়ে আপ্লুত হয়ে বলেন, ” স্যার মানুষ নয় মহামানব”।
প্রোডাকশন ম্যানেজার মিজানুর রহমান ও হুমায়ুন কবির একই সুরে বলেন, স্যারের আন্তরিকতা ও বিচক্ষণ সিদ্ধান্তের ফলে আমাদের অফিসের সকলের মাঝে একটা আত্মার সম্পর্ক গড়ে উঠেছে, যার ফলে আমরা উৎকৃষ্ট কর্মপরিবেশে কাজ করে কারখানার কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছাতে সক্ষম হতে পারছি।