|

অাজ ত্রিশালে নজরুল জয়ন্তীর উদ্বোধন করবেন রাষ্ট্রপতি

প্রকাশিতঃ ১২:৫০ অপরাহ্ণ | মে ২৪, ২০১৮

ওয়াহিদুল ইসলাম, জাককানইবি: দীর্ঘদিন পর জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১১৯তম জন্মজয়ন্তী ও জন্মবার্ষিকীর জাতীয় পর্যায়ের মূল অনুষ্ঠানমালা এ বছর কবির কৈশোর স্মৃতি বিজড়িত ত্রিশালের দরিরামপুর নজরুল একাডেমী মাঠে স্থাপিত স্থায়ী নজরুল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ১১ই জৈষ্ঠ্য, ২৫ শে মে শুক্রবার বিকেল সাড়ে তিনটায় সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় আয়োজিত তিনদিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করবেন রাষ্ট্রপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ।

ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক ড. সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস জানান, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এবং ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ মসিউর রহমান। সভাপতিত্ব করবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয় সর্ম্পকিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি বেগম সিমিন হোসেন রিমি। ২৫শে মে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং ২৬ ও ২৭শে মে নজরুল জয়ন্তীর অনুষ্ঠান জেলা প্রশাসন ব্যবস্থাপনা করবেন। নজরুল জয়ন্তী উপলক্ষে ত্রিশাল উপজেলা সদরে সাজ সাজ রব বিরাজ করছে। সর্বত্র বইছে আনন্দের বন্যা। ত্রিশাল শহরের গুরুত্বর্পূণ স্থানগুলোতে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তার চাদরে রয়েছে নজরুল মঞ্চসহ অনুষ্ঠানের মূল প্যান্ডেল। আগত অতিথিদের জন্য আমন্ত্রনপত্র সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয় থেকে সরবরাহ করা হয়েছে। যাতে কার্ড নম্বরও দেওয়া আছে এবং সে অনুযায়ী আসন ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এদিকে দীর্ঘদিন পর ত্রিশালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১১৯তম জন্মবার্ষিকীর জাতীয় পর্যায়ের মূল অনুষ্ঠানমালা কবির কৈশোর স্মৃতি বিজড়িত ত্রিশালে আয়োজন করা হচ্ছে এবং ওই অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ আসবেন এই খবর শুনে ত্রিশালসহ ময়মনসিংহের সকল পর্যায়ের কবি ভক্তদের মাঝে বইছে আনন্দের বন্যা। ১৯৬৫ সালে বাংলাদেশে প্রথম ত্রিশালে কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকীর আয়োজন করা হয়েছিলো। তৎকালীন জেলা প্রশাসক পিএ নাজির ছিলেন এর উদ্যোক্তা।  এরপর ১৯৯০ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানমালা রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে উদযাপন করেন। এরপর কয়েক বছর ত্রিশালে কবি নজরুল জয়ন্তী জাতীয় পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হলেও পরবর্তীতে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হতো। জাতীয় পর্যায়ের মূল অনুষ্ঠান না হওয়ার কারণে হতাশ হন ত্রিশালবাসী তথা ময়মনসিংহবাসী। এ বছর অনুষ্ঠানের আয়োজনে বেজায় খুশি ত্রিশালবাসী।

ত্রিশালের কাজির শিমলার দারোগা রফিজ উদ্দিন আসানসোলের চাকুরীরত অবস্থায় আসানসোলের এক রুটির দোকান থেকে কিশোর নজরুলকে ত্রিশালের কাজির শিমলায় নিয়ে আসেন। সেখান থেকে  ১১ কিলোমিটার দূরে ত্রিশাল সদরে দরিরামপুর হাইস্কুলে (বর্তমানে নজরুল একাডেমী) ভর্তি করিয়ে দেন। কবি এই স্কুল প্রায় দুই বছর পড়ালেখা করেন। স্কুলের নিকেটে ত্রিশাল নামাপাড়ায় বিচুতিয়া বেপারী বাড়িতে নজরুলকে জায়গীর করে দেন দারোগা রফিজ উদ্দিনের আত্মীয়রা । সেখান থেকে শুকনি বিলের ধার দিয়ে স্কুলে যাতায়াত করতেন নজরুল। পথিমধ্যে শুকনি বিলের ধারে অবস্থিত বর্ধিষ্ণু বটবৃক্ষে চড়ে কিশোর কবি বাঁশি বাজাতেন উদাস সুরে। সেখানে গো-রাখালদের সাথে গুল্লাছুট ও দাঁড়িয়া বান্দা খেলায় (ত্রিশালে তৎকালীন জনপ্রিয় খেলা) মেতে উঠতেন কিশোর কবি নজরুল । সেই শুকনি বিলের ধারে ঐতিহাসিক বটবৃক্ষ চত্বরে গড়ে উঠেছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়।

এদিকে ত্রিশালে নজরুল জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে তিনদিনব্যাপী নজরুল মেলা নজরুল একাডেমী ও নজরুল কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত হবে। মেলায় লাখো নজরুল ভক্তদের মিলনমেলা ঘটবে।

ত্রিশাল থানার ওসি জাকিউর রহমান জানান, আইনশৃংখলা রক্ষায় পুলিশ বাহিনী সজাগ রয়েছে। ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবুজাফর রিপন জানান, মহামান্য রাষ্ট্রপতির আগমন ও নজরুল জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে সর্বত্র নিছিদ্র নিরাপত্তা রয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email