শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী না হলে এক লাখ লোক মারা যাবে : তোফায়েল
প্রকাশিতঃ ৯:৩১ পূর্বাহ্ণ | সেপ্টেম্বর ০৩, ২০১৮

ভোলা প্রতিনিধি : আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, আগামীতে শেখ হাসিনাকে আবার প্রধানমন্ত্রী করতে হবে। শেখ হাসিনা আবার প্রধানমন্ত্রী না হলে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না এলে প্রথম দিনেই এক লাখ লোককে হত্যা করা হবে। কেউ বাড়িঘরে থাকতে পারবে না। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসার পর ভোলায় সংখ্যালঘুদের ওপর ভয়াবহ অত্যাচার, ধর্ষণ-নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, সেদিন হিন্দু মা-বোনেরা বাড়িতে থাকতে পারেননি। নিজের সতীত্ব রক্ষা করার জন্য মেয়েরা পানির মধ্যে লুকিয়েছিল। সেখান থেকে ধরে এনে বিএনপির সন্ত্রাসীরা মায়ের সামনে পাশবিক অত্যাচার করেছে। এমনটি আর হতে দেওয়া যায় না। আমরা অশুভ শক্তিকে ভোটযুদ্ধে পরাজিত করে একটি শুভ সুন্দর সমাজ গড়ব। গতকাল বিকালে ভোলার বাংলা স্কুলমাঠে শ্রীকৃষ্ণের শুভ জন্মাষ্টমীর আনন্দ শোভাযাত্রার সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এসব কথা বলেন। ভোলা জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি প্রফেসর দুলাল চন্দ্র ঘোষের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিশেষ অতিথি বিশিষ্ট সাংবাদিক পীর হাবিবুর রহমান, পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক গৌরাঙ্গ চন্দ্র দে। উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মো. মাসুদ আলম ছিদ্দিক, পুলিশ সুপার মো. মোকতার হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক জহিরুল ইসলাম নকিব, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. ইউনুছ, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মইনুল হোসেন বিপ্লব প্রমুখ। পরে মন্ত্রী বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় অংশ নেন। বর্তমানে বিএনপি খুব শান্তিতে আছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমরা কারও ওপর কোনো অত্যাচার করিনি এবং করবও না। বিএনপি নেতা-কর্মীদের অত্যাচারী উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, অশুভের বিরুদ্ধে একটি শুভ সমাজ গড়ার জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনাকে আবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী করতে হবে। মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছেন। আজকে দেশ আন্তর্জাতিক বিশ্বে মর্যাদার আসনে। তিন মাস পর জাতীয় নির্বাচন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশবাসী শান্তিতে থাকবে।
পীর হাবিবুর রহমান বলেন, সুমহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের আলো ছড়িয়েছিলেন। তাঁর উত্তরাধিকারিত্বই আমাদের বহন করতে হবে।
স্বাধীনতা জাদুঘর পরিদর্শন : এর আগে সকালে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে ভোলার বাংলাবাজারে প্রতিষ্ঠিত স্বাধীনতা জাদুঘর, নান্দনিক স্থাপত্যে নির্মিত মসজিদ, বৃদ্ধাশ্রম, কলেজসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক ও নিউজ টোয়েন্টিফোর টেলিভিশন ও রেডিও ক্যাপিটালের সিইও নঈম নিজাম, বাংলাদেশ প্রতিদিনের নির্বাহী সম্পাদক পীর হাবিবুর রহমান, ৭১ টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল বাবু এবং ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষক মো. এ আরাফাত।
অতিথিরা স্বাধীনতা সংগ্রামের ঐতিহাসিক বিভিন্ন নিদর্শন, স্থিরচিত্র ও স্বাধীনতার সংগ্রামবিষয়ক মূল্যবান দলিলসহ বিভিন্ন স্মারকগ্রন্থ প্রত্যক্ষ করেন। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত এই স্বাধীনতা জাদুঘরটি চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ উদ্বোধন করেন। ভোলা জেলা শহর থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে মুক্তিযুদ্ধে ভোলার ঐতিহাসিক স্থান বাংলাবাজারে বাণিজ্যমন্ত্রীর মায়ের নামে প্রতিষ্ঠিত ফাতেমা খানম কমপ্লেক্সে ৩ বছর আগে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
আধুনিক স্থাপত্যশিল্পের অনন্য নিদর্শন তিনতলা স্বাধীনতা জাদুঘরে তিনটি গ্যালারি রয়েছে। প্রথমতলার গ্যালারিতে এক পাশে ইতিহাস ঐতিহ্য, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, ’৪৭-এ দেশ ভাগ ও ভাষা আন্দোলনের দুর্লভ ছবি ও তথ্য রয়েছে। অপর পাশে রয়েছে লাইব্রেরি ও গবেষণাগার। এ ছাড়া ওই একই তলায় রয়েছে মাল্টিমিডিয়া ডিসপ্লে হলরুম। এখানে বঙ্গবন্ধুর সব ভাষণের অডিও ও ভিডিও ডিজিটাল প্রদর্শনীর ব্যবস্থা রয়েছে। দর্শনার্থীরা ডিজিটাল টাচস্কিন ব্যবহার করে যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত ও তথ্য জানতে পারবেন; এমন তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবস্থাও রয়েছে। দ্বিতীয়তলায় রয়েছে ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধের আগ পর্যন্ত ইতিহাসের বেশকিছু স্থিরচিত্র। তৃতীয়তলায় রয়েছে যুক্তফ্রন্ট, ’৫৮-এর আন্দোলন, পাকিস্তানের সামরিক শাসন, ’৬৬-এর আন্দোলন, ’৬৯-এর গণআন্দোলন, ’৭০-এর নির্বাচন, ৭ মার্চের ভাষণ, ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধুর আত্মত্যাগের দুর্লভ আলোকচিত্র।
সুত্র: বাংলাদেশপ্রতিদিন.