|

ত্বক ও চুলের যত্নে নিমের ব্যবহার

প্রকাশিতঃ ১১:২০ পূর্বাহ্ণ | সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৮

ডেস্ক রিপোর্ট, ভালুকার খবর: বিভিন্ন স্বাস্থ্যকর গুনাগুন ছাড়াও ত্বক ও চুলের যত্নে নিমের ভুমিকা অপরিসীম। ত্বকের নানা প্রকার সমস্যা যেমন ব্রণ, আচিল, খুসকি, ও চুল পড়া রোধে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। তাই আপনার বিউটি বক্সে সর্বদা নিমের যে কোন প্রসাধনী রাখতে পারেন।

ত্বক ও চুলের যত্নে নিমের ভুমিকা

১। চর্মরোগের সংক্রমণ রোধ করে:

নিমের পাতায় ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও ছত্রাক প্রতিরোধী উপাদান থাকে । এর নিয়মিত ব্যবহারে আমাদের ত্বকে জীবাণু বাসা বাঁধতে পারে না। এছাড়াও ত্বকের জ্বালাপোড়া রোধেও এটা অনেক কার্যকরী। নিমপাতা পানিতে সিদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে গোসল করলে খোসপাঁচড়া চলে যায়। পাতা বা ফুল বেটে গায়ে কয়েকদিন লাগালে চুলকানি ভালো হয়। এজন্য যে কাজটি করতে হবে তা হলো কিছু নিমপাতা পানিতে গরম করতে হবে। পানি হালকা সবুজ হয়ে আসলে এর সাথে কিছু পানি মিশিয়ে গোসল করলে বিভিন্ন চর্মরোগ নিরাময়ে ভালো ফল পাওয়া যায়।

২। ব্রণ সমস্যা দূর করে:

ব্রণ হচ্ছে আমাদের চামড়ার স্যাবাকাস নামক গ্ল্যান্ডের অতিরিক্ত নিঃসরণ ও চামড়ার ঘর্মগ্রন্থির ছিদ্রপথে ধুলাবালি ও ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের ফলাফল। নিমের তেল শরীরে মাখলে স্যাবাকাস গ্ল্যান্ডের অতিরিক্ত নিঃসরণ বন্ধের সাথে সাথে ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ হতেও চামড়াকে রক্ষা করে। ফলে ত্বকে নতুন করে ব্রণ হতে বাঁধা দেয়। এছাড়া নিমপাতা সিদ্ধ করে পানিতে তুলা ভিজিয়ে মুখে মাখলেও ভালো কাজে দেয়। নিম-শশা অথবা নিম-দই ফেসপ্যাক ত্বকের অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাবকে দূর করতে খুবই কার্যকরী ভুমিকা পালন করে।

৩। ত্বকের কুঁচকে যাওয়া রোধ করে:

নিয়মিত নিমের ব্যবহারে কুঁচকে যাওয়া দূর করে ত্বকের মসৃণতা বজায় রাখতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। ত্বকে অতিরিক্ত পিগম্যান্ট নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণে রাখতেও গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। নিমপাতা মিশ্রিত পানি ব্রণের দাগ ও ক্ষত রোধেও খুবই কার্যকরি। এটা ত্বককে টাইট রাখতেও সাহায্য করে।

৪। ত্বকের শুষ্কতা রোধ করে:

ত্বকের শুষ্কতা রোধে নিম-প্যাক খুবই কাজে দেয়। এর মধ্যে আর্দ্রতা রক্ষার ক্ষমতা থাকায় ত্বকের শুষ্কতা, খসখসে ভাব ও চুলকানি রোধে বিশেষ ভুমিকা পালন করে। এজন্য কিছুটা নিম পাউডার আঙ্গুর বীজের তেলের সাথে মিশিয়ে পেস্টের মতো করে মুখে মেখে কয়েক মিনিট রাখতে হবে, এরপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। এভাবে এক থেকে দুই সপ্তাহ ব্যবহার করলে লক্ষণীয় সাফল্য পাওয়া সম্ভব।

৫। মুখে কালো ও সাদা মেস্তা এবং গভীর ক্ষত রোধ করে:

মুখে কালো ও সাদা মেস্তা এবং গভীর ক্ষত রোধে নিম ব্যবহার হয়ে থাকে। এইসব সমস্যার সমাধানে যা করতে হবে তা হলো কমলার খোসার সাথে নিমপাতার মিশ্রণ তৈরি করে তার সাথে কয়েক ফোঁটা মধু এবং দই মিশিয়ে আক্রান্ত স্থানে লাগাতে হবে। ভালো ফলাফলের জন্য কমপক্ষে তিন সপ্তাহ লাগাতে হবে। তবে শুধু কালো মেস্তা হলে আক্রান্ত স্থানে নিমের তেল মাখলেই চলবে।

৬। মাথার ত্বকের যত্নে ও চুলের খুসকি রোধ করে:

নিমের এন্টি-ব্যাকটেরিয়া ও এন্টিসেপ্টিক গুণ রয়েছে যা মাথার ত্বকের যত্নে খুবই কার্যকরি। নিমের তেল মাথায় মাখলে তা নতুন করে চুল গজাতে ও খুশকি প্রতিরোধে কাজ করে থাকে। এজন্য চুলের গোঁড়ায় তেল ভালো করে মাখতে হবে। এই তেল চুলের দৃঢ়তা রক্ষায়ও সহায়ক ভুমিকা পালন করে। চুলের খুশকি রোধে নিমের পাতার গুড়া পানিতে গুলিয়ে মাথায় এক ঘণ্টা রাখতে হবে। এরপর চুলে শ্যাম্পু মেখে পানি দিয়ে ভালো করে মাথা ধুয়ে নিলে খুশকির সমস্যা কমে যাবে।

নিমপাতার গুণ নিয়ে নতুন করে তেমন বলার কিছু নেই। আমরা সবাই এর বিভিন্ন গুণ সম্পর্কে কমবেশি জানি। প্রাচীনকাল থেকেই নানা অসুখ-বিসুখে ও রোগ জীবাণু সংক্রমণ রোধে যেমন ফোঁড়া, চুলকানি, ফোসকাসহ ত্বকের নানা সমস্যায় ব্যবহার হয়ে আসছে। তাই এই নিমই হতে পারে আপনার দৈনন্দিন রূপচর্চার অবিচ্ছেদ্য অংশ।

৭. একজিমা চিকিৎসায়:

এক টুকরো নিমের বাকল সারারাত পানিতে ফিজিয়ে রাখুন। এরপর সেটা বেটে পেস্ট করে একজিমা আক্রান্ত স্থানে লাগান। এটা খুবই কার্যকর।

Print Friendly, PDF & Email