|

মা, বৃদ্ধাশ্রম ও ভিক্ষা!

প্রকাশিতঃ ৮:০৫ পূর্বাহ্ণ | ডিসেম্বর ০৮, ২০১৮

সকালের জার্নি ও সারাদিনের নির্ধারিত কাজের পর,মাথা ব্যথার কল্যাণে রাত ১১,৩০মিনিটে বাসা থেকে বের হই এককাপ চা খাওয়ার অযুহাতে!

৫ তলা থেকে সিঁড়ি বেয়ে নামতেই চা খাওয়ার শখ মিটে গেছে।

অনুমানিক ৫০ গজ সামনেই চায়ের দোকান।

জনাব,মজিবর সাহেব,

তিন সন্তানের জনক,

দুই ছেলে এক মেয়ে।

মেয়েটা বেশ মেধাবী ঢাবিতে পড়ছে রসায়ন নিয়ে!

এক ছেলে মাদরাসায় পড়ে হিফজ বিভাগে

মাসিক খরচ ৭হাজারের কাছাকাছি।

অার ছোট ছেলে ৩০ডিসেম্বর ৩ বছরে পা দিবে।

মজিবর সাহেব বেশ সুখি তার সংসার নিয়ে।

দিনে অন্তত চার থেকে পাঁচবার যাওয়া হয় ওনার কাছে!

যায় হোক এবার কাজের কথায় অাসি,

২৫ গজ রাস্তা হাঁটার পর ৮০ উর্ধবয়সী এক মায়ের ডাকে দাঁড়ায় অামি!

ছোট্ট পেয়ালা হাতে,

অামি কাছে যাই,

জানতে চাই বাড়ি কোথায়,

কে কে অাছে?

মা,

হাউমাউ করে কান্না শুরু করে

কথা বলতে পারেনা।

অামি বুকে টেনে নিয়ে চায়ের দোকানে বসায়।

অার শুনতে থাকি মায়ের ফেলে অাসা দিন গুলোর কথা।

উনার কথা শুনে অামিও মনের অজান্তে কেঁদে উঠি,

এখনো কাঁদছি!

এই বৃদ্ধ মায়ের নাম হাজেরা খাতুন,

চাঁদপুর বাড়ি,

স্বামীকে হারিয়েছেন দীর্ঘ ২৫ বছর অাগে।

এক ছেলে ও এক মেয়ের জননী।

ছেলে মাছুম বাপের রেখে যাওয়া সম্পদ বিক্রি করে বিদেশ পাড়ি দিয়েছেন

বছর ১০ অাগে।

হাজেরা বানু এতোদিন মেয়ের কাছেই ছিলো।

এই মাস ৫ য়েক অাগে মেয়ের বাড়ি ছেড়েছেন জীবিকার তাগিতে।

এখন কখন শহিদ মিনার,কখন শাহবাগ

অাবার কখন লালবাগ শাহী মসজিদের অাশপাশে ঘুমান।

কোনদিন এমনো হয়!

সারারাত হেটে হেটেই কাটিয়েদেন,

একটু খাবারের জন্য!

অথচ,

তার সম্তানগণ বেশ সুখে অাছে

স্বামী সন্তান ও বউ সন্তানদের নিয়ে।

কিন্ত-

হতভাগা মা!

সেই সন্তানের জন্য অাজো পথ চেয়ে থাকে!

দুইহাত তুলে দোয়া করে,

যেনো ওরা ভালো থাকে!

মায়ের অাজ ঘরে তো জায়গা হয়েইনি!

বৃদ্ধাশ্রমেও জায়গা হয়নি!

জায়গা হয়েছে

ফুটপাতে!

ধিক্কার জানাই এমন সন্তানদেরকে,

অার সমবেদনা ছাড়া কিবা করার অাছে এই সব মায়ের জন্য!

বি:-দ্র:- অামার অার চা খাওয়া হয়নি!

 

হাবিব জিহাদী

মানবাধিকার কর্মী

Print Friendly, PDF & Email