|

সৌভাগ্য ও মুক্তির রজনী শবেবরাত

প্রকাশিতঃ ৫:৫৭ পূর্বাহ্ণ | মে ০১, ২০১৮

মো. আসাদুজ্জামান সুমন:

আজ পবিত্র শবেবরাত। মহিমান্বিত এই রজনীকে মুক্তির রাত, সৌভাগ্যের রাত হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ রাত ধর্মপ্রাণ মানুষকে একটি নতুন মানুষে পরিণত করে। মানুষ শুভচিন্তা, সৎকর্মের আদর্শ গ্রহণের মাধ্যমে এক নতুন জীবন লাভ করে। শুধু ব্যক্তিগত জীবনে নয়, জাতীয় ও রাষ্ট্রীয় জীবনেও সব কিছু শুভ ও সুন্দর হোক, আল্লাহর দরবারে এমন প্রার্থনা করা হয়। সমাজে থাকা অন্যায়-অবিচার-অনাচার, সাধারণ মানুষের কষ্ট-দুঃখ-দুর্দশা লাঘবের জন্য মহান আল্লাহর দরবারে আকুতি জানানো হয়। এই রাতের গুরুত্ব সম্পর্কে বলা হয়ে থাকে, পরবর্তী বছরের হায়াত, মউত, রিজিক, দৌলত, আমল ইত্যাদির আদেশ-নিষেধ এ রাতেই ফয়সালা করা হয়। এ রাতে ইবাদত ও প্রার্থনার মধ্য দিয়ে বিশ্বের মুসলমানরা পরম করুণাময় আল্লাহর দরবারে আকুতি জানায়। সারা রাত ইবাদতে মগ্ন থাকে। আল্লাহর রহমত, বরকত ও মাগফিরাত কামনা করে। দুঃখ-বঞ্চনা, ব্যথা-বেদনা থেকে মুক্তির জন্য সৃষ্টিকর্তার অনুকম্পা চায়। নিজেদের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। হিজরি সন অনুসারে শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতটিকেই শবেবরাত বা মুক্তির রাত হিসেবে গণ্য করা হয়। আরবিতে এ রাতকে বলা হয় লাইলাতুল বারাত বা মুক্তির রজনী। পাপকর্মের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে গুনাহ থেকে মুক্তিলাভ ও ভবিষ্যতের সৌভাগ্যময় প্রস্তুতি, উভয়ের জন্যই এ রাত প্রত্যেক মুসলমানের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ। রমজান মাসের আগের মাস শাবান। রমজানের সিয়াম সাধনার প্রস্তুতি হিসেবে শাবান মাসকেও বরকতময় মাস বলে অভিহিত করা হয়েছে। হাদিস শরিফে শাবান মাসের ১৪ তারিখের রাতকে ইবাদতের জন্য উত্তম সময় বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ রাতে যারা আল্লাহর কাছে রহমত ও বরকত প্রার্থনা করে তারা তা পায়, তারা সৌভাগ্য লাভ করে। মহান আল্লাহ চান, মানুষ পাপ-তাপ থেকে মুক্ত হয়ে সুখ-সমৃদ্ধিতে জীবন যাপন করুক, মানুষ সৌভাগ্য লাভ করুক।

শবেবরাতের মূল করণীয় একান্তে ও নীরবে ইবাদত করা। তাৎপর্যপূর্ণ এ রাতের বিশেষ বরকত হাসিলের উদ্দেশ্যে বিশ্বের মুসলমান সম্প্রদায় রাত জেগে ইবাদত-বন্দেগি, জিকির-আসকার, মিলাদ মাহফিল, নফল নামাজ আদায় ও কোরআন তিলাওয়াতে মশগুল থাকে। এ রাতের ফজিলত সম্পর্কে বলা হয়েছে, বরকতময় এই রজনীতে মুমিনদের প্রতি আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ বর্ষিত হয়। আল্লাহর দরবারে উপস্থাপন করা হয় মানুষের আমলনামা। নির্ধারিত হয় তাবৎ মানুষের আগামী এক বছরের রিজিক।

বন্ধুত্ব, সৌহার্দ্য ও সহযোগিতার ভিত্তিতে আমরা যেন এগিয়ে যেতে পারি। পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক জীবনেও আমাদের দুঃখ ও দুর্ভোগ লাঘব হোক। শবেবরাত সবার জীবনে মুক্তি ও সৌভাগ্যের অপূর্ব সুযোগ এনে দিক। এটাই হোক আজকের বিশেষ প্রার্থনা।

Print Friendly, PDF & Email